বাংলা ইঞ্জিনীয়ারিং বর্ণমালা
বৃহস্পতিবার, ৪সেপ্টেম্বর, ২০০৮
বৃহস্পতিবার, ৪সেপ্টেম্বর, ২০০৮
বৃহস্পতিবার, ৪সেপ্টেম্বর, ২০০৮
============================
সবটা ঠিক ঠিক পড়তে হলে সংগে দেওয়া লিংক থেকে ফন্ট ফ্রি ডাউনলোড করে নিতেবিনামূল্যে সর্বান্তিক বাংলা ইউনিকোড ফন্ট সরাসরি ডাউনলোড করুন নীচের এই লিংকে ক্লিক করে
উন্নত বাংলা ফন্ট
ইউনিকোড ফন্ট ডাউনলোড করার লিংক উপরে দেওয়া হল
লিংকে ক্লিক করুন ফন্ট ডাউনলোড হবে
যুক্তবর্ণ সরল গঠনের
বুঝতে লিখতে পড়তে সহজ
যুক্তবর্ণ সরল গঠনের
বুঝতে লিখতে পড়তে সহজ
============================
----------------------------
----বাংলা
ইঞ্জিনীয়ারিং
বর্ণমালা
নতুন বানান__ বাংলা ইঞ্জিনিয়ারিং বর্ণমালা
মনোজকুমার
বাংলা বর্ণমালার জ্যামিতিক রূপ হল__ বাংলা ইঞ্জিনিয়ারিং বর্ণমালা ঠিক যেমন ইংরেজির ক্যাপিটাল লেটার সহজে এবং পরিচ্ছন্নভাবে লেখা এবং ছাপার কাজে এগুলির ব্যবহার হতে পারে ইঞ্জিনিয়ারিং ড্রইং শিক্ষার শুরুতে এগুলিরই লেটার ড্রইং করা হয় বাংলা মুদ্রণের কাজে যদি এই বাংলা ইঞ্জিনিয়ারিং বর্ণমালা ব্যবহার করা হয়, তবে তা মুদ্রণ তথা প্রাসঙ্গিক ব্যয় প্রায় ৩০/৪০ শতাংশ কমাতে পারবে
ইংরেজি হরফগুলির যেমন ক্যাপিটাল গঠন আছে, বাংলা হরফগুলির তেমন কিছু নেই বিভিন্ন কৌণিক বা বৃত্তাকার গঠনের জন্য বাংলা হরফগুলির স্কেল ড্রইং করা কঠিন তাছাড়া, বাংলায় হরফ বেশি, স্বরচিহ্ন তথা কারচিহ্ন ইত্যাদি আছে এছাড়া আছে যুক্তবর্ণের সমুদ্র ইংরেজিতে যেমন অল্প হরফ এবং সংখ্যা হলেই কাজ চলে, বাংলায় কিন্তু হরফ দরকার তার চেয়ে অনেক বেশি
সংশোধিত এবং যুক্তিসংগত পদ্ধতি গ্রহণের ফলে বাংলায় মোট (১১+৩৯ +৯+৩ +১+৭=)৭০টি (অর্থাৎ কার্যকর ভাবে স্বরবর্ণ-১১, ব্যঞ্জনবর্ণ-৩৯, স্বরচিহ্ন- ৯, ফলাচিহ্ন-৩, সংযুক্ত হরফ-১, সংখ্যা-৭; এই মোট ৭০টি) হরফ গঠন হলে কাজ চলবে
ইঞ্জিনিয়ারিং ড্রইং করতে হলে লেটার ড্রইং বা অক্ষরাঙ্কন দিয়ে শুরু করতে হয় বর্তমানে বাংলার মাধ্যমে পড়াশুনা শুরু হয়েছে, তাই বাংলা বর্ণাঙ্কনও দরকার হয়ে পড়েছে স্কেল বা অন্যান্য ইঞ্জিনিয়ারিং যন্ত্রপাতি যেমন সেটস্কোয়ার, টি, কম্পাস ইত্যাদি দিয়ে আঁকার জন্য বাংলা বর্ণমালার এক সরল রৈখিক জ্যামিতিক রূপ দেওয়া হয়েছে, এই বিশেষ রূপকেই বলা হয়েছে_ বাংলা ইঞ্জিনিয়ারিং বর্ণমালা
বাংলা বর্ণমালার জ্যামিতিক রূপ দিতে গিয়ে বেশ কিছু বিভিন্ন ধরনের জটিল সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল যেমন__
(এক) একই মাপ__ সমস্ত হরফগুলি একই পরিমাপে আনা হয়েছে কিন্তু সকল হরফগুলিকে একই পরিমাপে আনা ছিল সবচেয়ে কঠিন কাজ কারণ হরফগুলির সাধারণ গ্রহণীয়(common) মাপ যে কী হবে তা নির্ধারণ করতে গিয়ে প্রায় সকল হরফেরই বহুবিধ রূপ অঙ্কন করতে হয়েছে অবশেষে এই হরফগুলির সাধারণ গ্রহণীয়(common) মাপ নির্ধারিত হয়েছে_ ৬×৭, তথা ৬:৭, অর্থাৎ গ্রাফ পেপারে ছয় ঘর উচ্চতা এবং সাত ঘর দৈর্ঘ্য (বা প্রস্থ) তথা পাশে ৭ ঘর নিতে হবে
(পরবর্তীকালে এই গঠনকে সামনে রেখে বাংলা হরফের আরও অনেক বিচিত্র রূপ দেওয়া হয়েছে, যা এর আগে দেওয়া সম্ভব ছিল না এই রূপগুলিকে দেখতে হলে এগুলি ফ্রি ডাউনলোড করে নিজের কম্পিউটারের উইন্ডোজ ফন্ট ফোল্ডারে ভরে(Load)/ঢুকিয়ে নিতে হবে নীচে উল্লেখ করা নিবন্ধটির সঙ্গে ফন্টগুলি আছে, যদিও অবশ্য তা বাংলা ইউনিকোড ফন্ট তৈরির পদ্ধতি নিয়ে লেখা যাঁরা এব্যাপারে উৎসাহী তাঁরা অবশ্যই দেখুন
লিংক: http://www.srishtisandhan.com/Also read the article on how to use the Bengali Unicode fonts [Download >>] সৃষ্টিসন্ধান.কম/নিজে ইউনিকোড ফন্ট তৈরি করুন ডাউনলোড )
এটা হল মূল বর্ণগুলির মাপ, অতিরিক্ত অংশ তথা বাহুগুলি এই মাপের বাইরে যেমন ক-এর আঁকড়ি
ছককাটা কাগজ বা গ্রাফ পেপারে ব্যাপারটি করে দেখা যাক__
বাংলা ইঞ্জিনিয়ারিং বর্ণমালা অঙ্কনের সমগ্র এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে কয়েক বছর সময় লেগেছে
(দুই) বর্গাকৃতি রূপ__ বাংলা লিপিগুলি বৃত্ত, উপবৃত্ত, বা ত্রিকোণ সহ বিভিন্ন কৌণিক গঠনকে বর্গাকৃতি রূপে আনা হয়েছে ফলে আঁকা বা লেখা সহজতর হবে
(তিন) দুটি সমান্তরাল সরল রেখার মধ্যে আঁকা__ বাংলা লিখন পদ্ধতিতে স্বরচিহ্ন অর্থাৎ আ-কার, ই-কার ইত্যাদি এবং ফলা বা যুক্তবর্ণ ইত্যাদির ব্যবহার এমন যে, উপরে নিচে, পাশে এসব বিভিন্ন-স্থানে চিহ্ন বা হরফ বসাবার জন্য লিখন তথা মুদ্রণস্থান খুব বেশি লাগে প্রস্তাবিত ব্যবস্থা বা পদ্ধতিতে সবকিছু লেখা হবে পাশাপাশি লাইনোটাইপে কম্পোজিং পদ্ধতি অনেকটা এই রকম এখন অবশ্য লাইনোটাইপ আর ব্যবহৃত হয় না এই হরফে পাশাপাশি ভাবে লিখন ব্যব্সথায় মুদ্রণস্থান লাগবে অনেক কম, যদিও মনে হবে যে মুদ্রণস্থান বেশিই লাগবে মুদ্রণস্থান কম লাগার অন্য কারণ আছে, সেটি আছে হরফের গঠনে বিশেষ বৈশিষ্ট্যে
বর্তমানে এক সেমি. উচ্চতার হরফে মুদ্রণ-উচ্চতা লাগে দুই সেমি এই প্রস্তাবিত পদ্ধতিতে এক সেমি উচ্চতার হরফে মুদ্রণ-উচ্চতা লাগবে এক সেমিই মাত্র
প্রস্তাবিত পদ্ধতিতে যুক্তবর্ণ লেখার প্রচলিত ধারার কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে, মুদ্রণ-উচ্চতা বা মুদ্রণস্থান কম লাগার রহস্যটা সেখানে বাংলা লেখার বর্তমান পদ্ধতি হল ত্রিস্তর(Three-Tier) বাংলা ইঞ্জিনিয়ারিং হরফে বাংলা লেখার পদ্ধতি দাঁড়াবে মাত্র এক স্তর(Monotier) স্থান সংকোচন সে কারণেই ঘটবে
বাংলা নতুন এই হরফ-গঠনের বর্ণ দিয়ে যুক্তবর্ণ তৈরি করতে দুটো বা তিনটে হরফ একত্রে জুড়ে নতুন আকৃতির বা প্রায়-নতুন অক্ষর তৈরি করতে হবে না এখানে হরফের বিকৃত বর্ণ-সমন্বয় করা হবে না যুক্তবর্ণের হরফগুলি বিশেষ কায়দায় পাশাপাশি লেখা হবে যুক্তবর্ণ তৈরি হবে ”বর্ণসমবায়“ পদ্ধতিতে, অর্থাৎ ছোট এবং বড় হরফ পাশাপাশি বসিয়ে বর্তমানের প্রচলিত পদ্ধতি মতো যুক্তবর্ণগুলি লিপ্তলিপি বা মণ্ড হরফ হয়ে উঠবে না যুক্তবর্ণের সূত্রদুটি হবে__ C1C2 এবং C1C1C2, যেখানে C=Consonant তথা ব্যঞ্জনবর্ণ C1= যুক্তবর্ণের লঘু প্রথম সদস্য/সদস্যগণ, C2= যুক্তবর্ণের গুরু তথা বড় শেষ সদস্যটি সকল বর্ণই কিন্তু হবে পূর্ণাঙ্গ, অখণ্ড, অমণ্ডীকৃত বা অলিপ্ত, অবিকৃত, পৃথগাঙ্গ, স্পষ্ট এবং যথাযথ সোজা কথায় যুক্তবর্ণ দলাপাকানো মণ্ড হরফ হবে না যুক্তবর্ণের সকল বর্ণই মাত্রার দিক ঘেঁষে পাশাপাশি বসবে যুক্তবর্ণের লঘু পূর্ব হরফ/গুলি তথা C1-এর আয়তন হবে ২/৩C2, অর্থাৎ C1 হবে যুক্তবর্ণের শেষ বর্ণটির(গুরু বর্ণটির) তথা C2-এর দুই-তৃতীয়াংশ যুক্তবর্ণের কোনও সদস্যই হাফ-বডি টাইপ হবে না বর্ণলিপ্তি হল বাংলা যুক্তবর্ণের এক বিষাদ চিত্র
বিশেষ ব্যতিক্রম হবে কেবলমাত্র ’ক্ষ‘ বর্ণটির ক্ষেত্রে এছাড়া, তিনটি ফলা চিহ্ন-- য-ফলা(য্), রেফ( র্ ), র-ফলা( ঢ়্ণ্র ) ব্যতিক্রম হিসেবে বজায় থাকবে
(চার)হরফের মাত্রা__ অক্ষর/বর্ণ/লিপি/হরফ থেকে মাত্রা বর্জিত হয়েছে জায়গা বেশি নেওয়া ছাড়া এখানে মাত্রার আর কোনও ভূমিকা নেই তাছাড়া, হরফ অঙ্কনেও তা জটিলতা সৃষ্টি করে, তাই বাংলা ইঞ্জিনিয়ারিং বর্ণমালা বা বাংলা কারিগরি বর্ণমালা থেকে মাত্রা বর্জন করা হয়েছে
(পাঁচ) বাছাই__ অঙ্কিত বর্ণগুলির মধ্য থেকে বিভিন্ন কৌণিক, বৃত্ত, উপবৃত্ত আকৃতি এবং শৌখিন গঠন ও অতীব সুন্দর লিপিরূপ থেকে বাছাই করে নির্দিষ্ট শর্তাধীন বর্ণগঠনটি কেবলমাত্র এখানে গ্রহণ করা হয়েছে সেকারণে প্রক্রিয়াটি ক্ষেত্রবিশেষে প্রবল মানসিক পীড়াদায়ক ছিল বর্ণের গঠন মনোরম হয়েছে অথচ সেটিকে গ্রহণ করা যায়নি, নির্দিষ্ট শর্ত অনুযায়ী সেটি গঠিত নয় বলে, তাই সেটি বর্জন করতে হয়েছে, ফলে তা প্রবল মানসিক পীড়ার কারণ ঘটিয়েছে
বাংলায় বর্ণাঙ্কন নেই, এবং সম্ভবত কোনও ভারতীয় ভাষাতেই নেই, তাই সকল হরফ একটি বাক্যে ব্যবহার করে কোনও বাক্যও(ইংরেজিতে যাকে বলে প্যানগ্রাম Pangram) নেই[A pangram (Greek: pan gramma, "every letter"), or holoalphabetic sentence, is a sentence using every letter of the alphabet at least once.] ইংরেজিতে এমন বাক্য হল__ A quick brown fox jumps over the lazy dog. বাংলায় এমন একটি বাক্য তৈরি করা হল যদিও বাক্যটি মোটেই সাবলীল নয়, কারণ বাংলায় হরফ অনেক বেশি হওয়ায় তা একটি বাক্যে ধরা বেশ কঠিন, আর তার আয়তনও অনেক বড় হবে বাংলাদেশের একটি ওয়েব ব্লগে/ব্লগ সাইটে(বাংলা ভাষা, আবু জার মোঃ আককাস ), এবং জিকোবাজি(ইশতিয়াক জিকোর ব্লগ) বলা হয়েছে বাক্যটি বেশ আড়ষ্ট ঠিকই, তবু যে সেটি আদৌ বোধ্য হয়েছে সেটাই বড় কথা, ভয় ছিল সেটি নিতান্ত দুর্বোধ্য না হয়ে পড়ে বাক্যটির প্রধান উদ্দেশ্য কম্পিউটার কিবোর্ডে সড়গড় হওয়া অবশ্য যখন বাক্যটি তৈরি করা হয় সেই
১৯৭০-এ কম্পিউটার ছিল না, ছিল টাইপরাইটার, এখন যে টাইপরাইটার ক্রমে অচল হয়ে পড়ছে হরফ অঙ্কনের কালে অভ্যাস করার জন্য এরকম বাক্য দরকার হয়, এটি গঠনের সেটিই মূল প্রণোদনা
নীচে যে ধারক বাক্যটি দেখানো হল, সেখানে বাংলা সকল হরফ তথা সকল স্বরবর্ণ, সকল ব্যঞ্জনবর্ণ, সকল স্বরচিহ্ন/কারচিহ্ন, সকল (আটটি) ফলা এবং সংখ্যা ইত্যাদি সবই আছে অর্থাৎ স্বরবর্ণ-১১, ব্যঞ্জনবর্ণ-৩৯, স্বরচিহ্ন-১০, ফলাচিহ্ন-৮, সংযুক্ত হরফ-১, এছাড়া, কমা, ড্যাশ, প্রশ্নচিহ্ন, হাইফেন, হস্চিহ্ন
__এই মোট ৭৪টি রূপ ব্যবহার করা হয়েছে আর যুক্তবর্ণ গঠনের নতুন পদ্ধতিও এখানে দেখানো হয়েছে এটি দেখার জন্য যে ফন্ট সাপোর্ট দরকার অর্থাৎ এই নির্দিষ্ট ফন্টটি দরকার তা পাবেন নীচে দেখানো লিংক থেকে, এবং তা বিনামূল্যে লাউনলোড করার সুবিধা সহ__
লিংক: http://www.srishtisandhan.com/A Bengali Unicode font utility [Download >>] সৃষ্টিসন্ধান.কম/ফন্ট ডাউনলোড
ধারক বাক্যটি নীচে দেখানো হল এটি বিশাল মিলিমিটার গ্রাফশিটে আঁকা হয়েছে, কালো (চাইনিজ) কালি দিয়ে তারপরে এটি মাইক্রো ফিল্ম থেকে নেওয়া ফটোপ্রিন্ট সেখান থেকে স্ক্যানারে ধৃত চিত্র
লিখনটি হল:__
-------বাংলা ইনজিনীয়ারিং বর্ণমালা
বিষণ্ণ ঔদাসীন্যে ঊষাবৌদি
বাংলাভাষায় প্রচলিত ঈশপের
নিখুঁত গল্পটির অর্ধেক
বলতেই ঋতু ভুঁইঞা আর
ঐন্দ্রিলা হৈ-হৈ করে উঠল-
ওঃ, থামো বুঝেছি বড্ডো
পুরানো ঢঙের গল্প- মূঢ়
আড়ম্বর ও আত্মশ্লাঘার ফল
জীবনে বিঘ্ন ও বৃহৎ ক্ষতি-
এই নীতি যার না?
মিত্র মনোজ ১২৩৪৫৬৭৮৯০ ১ ২ ৩ ৪ ৫ ৬ ৭ ৮ ৯ ০
বাংলা ভাষা বন বাংলা
শেষ সারিতে যে হরফগুলি আছে তার প্রথমে লেখা, ’বাংলা ভাষা‘ এটি হেলানো লেখা এবং হরফের কোণাগুলি গোল করে দেওয়া
পরের লেখাটি ’বন‘ এটি দেখানো হয়েছে গ্রাফে কেমন করে হরফ আঁকা হয় তার উদাহরণ
আর শেষে লেখা ’বাংলা‘
লেখাটি দেখানো হয়েছে ত্রিমাত্রিক করে, শুধুমাত্র ছায়াপাত ঘটিয়ে মূল হরফটি কিন্তু লেখা হয়নি ছায়ার সাহায্যে ”বাংলা“ শব্দটি লেখা মূল লেখাটি অনেক বড়, এখানে খুব ছোট করে ছেপে সাঁটা হয়েছে এই পদ্ধতিতে অনেক বিচিত্র করে বাংলা হরফ আঁকা যায়, যা মনে এক-এক ধরনের অনুভূতি জাগাবে তাদের বিচিত্র রূপে ইংরেজি হরফ অঙ্কনে এরকম অনেক অনেক বিচিত্র উদাহরণ আছে বাংলায় যার অনেকটাই এতকাল সম্ভব ছিল না উপরে দেওয়া লিংক থেকে অন্যান্য হরফ ডাউনলোড করে তার কিছুটা আভাস পাওয়া যাবে
চিত্রটি লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে, সংখ্যাগুলি প্রথমে লেখা হয়েছে একরেখা(Single Stroke) করে ’বাংলা ভাষা‘ শব্দটি লেখা হয়েছে ৬০৹ ডিগ্রি কোণ করে হেলিয়ে(Inclined) শেষের ”বাংলা“ শব্দটি লেখা ত্রিমাত্রিক(3-Dimentional) করে আর প্রদর্শিত বাকি সব লেখাগুলিই দ্বিরেখা(Double Stroke) করে লেখা এখানে ণ্ণ যুক্তবর্ণটিতে দুটি ণ পাশাপাশি আছে, এখানে যুক্তবর্ণ দলা পাকায় না, তাই ণ পৃথকভাবে দেখানো নেই
বাংলা হরফগুলির গঠন, লেখার রীতি, যুক্তবর্ণ ইত্যাদি একটু মন দিয়ে খেয়াল করলেই স্পষ্ট হবে তা কেন, এবং কেমন ভাবে গঠিত
এখানে হরফের এক্স-হাইট বড়, ফলে লেখা বড় হবে, পড়া সহজ হবে হরফের যা উচ্চতা সেই উচ্চতার সীমারেখায় কাল্পনিক ভূ-সমান্তরাল দুটি সরলরেখার মধ্যে লেখার সকল হরফ, চিহ্ন ইত্যাদি রাখা হয়েছে ই-কার, ঈ-কার, উ-কার, ঊ-কার কিংবা রেফ র-ফলা, ব-ফলা ইত্যাদিও সব সেই পরিসরের মধ্যেই আঁটানো হয়েছে চলতি অভ্যাসে তা আঘাত করবে ঠিকই, কিন্তু বাংলা লেখাকে তা অনেক দিকে সঞ্চারিত করে দেবে
বাংলা হরফের এবং লেখার মূল কাঠামোটিকে এখানে মোটামুটি অক্ষত রাখা হয়েছে বড় পরিবর্তন হয়েছে যুক্তবর্ণ গঠনে যা অনেক যুক্তিভিত্তিক ও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে পড়ার পক্ষে তা অনেক সহজ হবে তবে এভাবে হাতে করে লেখা সহজ হবে না, হাতের লেখা যেমন চলছে তেমনই চলতে পারে ইংরেজিতেও ক্যাপিটাল লেটারে হাতে করে লেখা হয় না, হাতের লেখা মূল ছাপার লেখা থেকে অনেক আলাদা
লেখা জটিলতামুক্ত বলে খুব ছোট টাইপেও লেখা পড়া যাবে, আবার হরফের এক্স-হাইট বড় বলে সে লেখা বড়ই দেখাবে, অর্থাৎ সোজা করে বললে লেখার পাঠযোগ্যতা(Legibility) বাড়বে
বাংলায় ই-কার, ঈ-কার, উ-কার, ঊ-কার রেফ, র-ফলা, ব-ফলা ইত্যাদি চিহ্ন হরফের মাত্রাকে ছাপিয়ে উপরে ওঠে, এবং তলার রেখার নীচে চলে যায়, যে কারণে বাংলা হরফের এক্স-হাইট বড় হয় না এখানে সেই অসুবিধে নেই বলে হরফের এক্স-হাইট প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে ফলে বড় লেখা পড়তে পারা যাচ্ছে সহজে, অথচ তা লিখতে জায়গা লাগছে কম এখানে হরফের উচ্চতা এক সেমি হলে তা দিয়ে লিখতে এক সেমি উচ্চতাই লাগছে স্থান সংকোচন তাই আপাত মনে হচ্ছে ৫০%শতাংশ কিন্তু হিসেব করে দেখা গেছে যে, পাশের দিকে চিহ্নাদির সম্প্রসারণের ফলে তা ৫০ শতাংশ না থেকে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ হয়ে যাচ্ছে
ছাপায় জায়গা কম লাগার মানে কাগজ কম লাগবে, বই কম দামে পাওয়া যাবে, ফলে লেখাপড়ার বিস্তার ঘটবে কিছুটা সহজে যদিও এখন কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের যুগে এমন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে যে, কাগজ আর প্রায় লাগবেই না, লক্ষ লক্ষ পাতা লেখা যাবে কাগজ ছাড়াই! তবু যাঁরা ইন্টারনেট ব্যবহার করেন তাঁরা ভুক্তভোগী__ কম্পিউটার স্ক্রিনে বাংলা লেখা প্রায় পড়াই যায় না, এতই তা ছোট লেখা বিশেষ করে বাংলা সিস্টেম-ফন্ট ”বৃন্দ“-তে পড়া বড়ই কঠিন অথচ ইংরেজি লেখা খুব ছোট হলেও পড়া কঠিন নয় তার মূলে সেই হরফের এক্স-হাইট বাংলায় যা খুবই কম
পাঠকদের অবগতির জন্য জানাই, আমার করা ”নতুন-কলম৯১“ বাংলা ইউনিকোড ফন্টটিতে হরফের এক্স-হাইট অনেকটা বড় করা হয়েছে যদিও তা সাধারণ চলতি হরফই তাই নেটে তা পড়তে বেগ পেতে হয় না তবে এখানে নতুন পদ্ধতি অনুসরণ করে, বাংলা যুক্তবর্ণ লজিক্যাল করা হয়েছে
তখন ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দ সবে ডেস্কটপ পিসি চালু হয়েছে, কোলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটারে বাংলা লেখার ব্যবস্থা করার জন্য পিএইচডি গবেষণা করছিলেন ছাত্র সমর ভট্টাচার্য তিনি বাংলা এই কারিগরি হরফগুলিকে তার গবেষণার চেষ্টার ফল অনুধাবন করার জন্য কিছু শব্দের কম্পিউটার রূপ দিলেন লেখা হল_- ’বই পড়ুন‘(২৫.০৯.১৯৮২)
কয়েক বছর পরে আবার লেখা হল__ ’অম্বা‘(১৫.০৬.১৯৮৫)
সেখানে বাংলা চর্চার জন্য ’বর্ণচর্চা‘ নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলা হয়েছিল ডঃ তপন ঘোষাল, ডঃ পবিত্র সরকার, অশোক মুখোপাধ্যায়, দীপঙ্কর সেন প্রমুখ খ্যাতকীর্তি ব্যক্তিদের সঙ্গে বর্তমান লেখকও অন্তর্ভুক্ত ছিল
সমর ভট্টাচার্য প্রথম বাংলা লেখার সফ্টওয়্যার ”বিদ্যাসাগর“ তৈরি করে পিএইচডি হন যদিও তা শেষ অবধি বাজারে আসেনি
বাংলা লেখার সব চেয়ে জটিল দিকটি হল এর যুক্তবর্ণ বাংলায় প্রায় ৩৫৬ ৩৯৫টি বিশুদ্ধ যুক্তবর্ণ আছে, তার ৫৭ ৫৬টি সান্দ্রধ্বনি, অর্থাৎ তা বিশ্লিষ্ট করে উচ্চারণ করা যাবে না তবে সবগুলিকেই সরল স্পষ্ট যুক্তবর্ণ করে লেখা যাবে পদ্ধতিটি হবে ’বর্ণসমবায়‘ পদ্ধতি কেবল দুটি যুক্তবর্ণকে মণ্ডহরফ করে লেখা হবে, সে দুটি হল__ ক্ষ, জ্ঞ
যদি লেখা হয়__ ’বিস্তর পুস্তক দোস্তকে সস্তায় গস্তায়‘ তবে তা বিশ্লিষ্ট করে উচ্চারণ করা যাবে, লেখাও যাবে তবে, ’স্তরে স্তরে স্তম্ভিত মেঘস্তূপ‘ বাক্যে ”স্ত“ বিশ্লিষ্ট করে উচ্চারণ করে যাবে না, কারণ এটি ’দল‘ তথা সিলাবেলের(Syllable) প্রথমে অবস্থান করছে
বিস্তর লেখা যাবে বিস্তর, এবং বলাও যাবে বিস্তর, কিন্তু স্তর কখনও স্তর লেখা চলে না, বলাও চলে না এটা অবশ্য এই আলোচনার ক্ষেত্র নয়, এটি ভাষাতত্ত্বের বিষয় কিন্তু লেখার বিষয়টি সর্বত্র সমানভাবে প্রসারিত হওয়া চাই, তাই এটিও আলোচনায় এসে পড়ে তবে বাংলা কম্পিউটার সফ্টওয়্যার তৈরির সীমাবদ্ধতার জন্য কোনও কোনও সময়ে এরকম করে লিখতেও দেখি বিশেষ করে বিদেশি নাম বা স্থানের বানানে যদি যুক্তবর্ণ গঠনকে মুক্ত সমাবেশ করে রাখা যায়, তথা যুক্তবর্ণকে ’বর্ণসমবায়‘ পদ্ধতিতে লেখা হয়, তবে এই সমস্যা হবে না মনে রাখতে হবে যে, তা নাহলে প্রতিটি মণ্ড হরফ বাংলা ফন্টের UI (Unnumbered Information frame)ভাণ্ডারে সঞ্চিত রাখতে হয়, যেটা নানা কারণে হয়ে ওঠে না, ফলে কাজের সময়ে বিপদে পড়তে হয় ফলে সংশোধন না হওয়া অবধি তা দিয়ে সঠিক লেখা যাবে না আর বাংলায় সঠিক যুক্তবর্ণ কিংবা মণ্ড হরফ যে ক‘টি তা-ই তো স্পষ্ট নয় যদিও আমি এর বিস্তারিত তালিকা এক কালে তৈরি করেছি, কিন্তু তা অনেকটাই অনিশ্চিত ধরি, একটা শব্দ ’টঙ্কার‘ লেখা যাবে টংকার সে ক্ষেত্রে ঙ্ক দরকার নেই, কিন্তু কেউ যদি তা ’ঙ্ক‘ দিয়ে টঙ্কার লিখতে চান তবে তাকে বাধা দেওয়া যায় না ফলে যুক্তবর্ণ বা মণ্ড হরফ ঙ্ক তৈরি রাখতে হবে আবার এই প্রশ্ন আসে যে ”ংক“ তবে কি যুক্ত বর্ণ? না কি তা কেবলই বর্ণ-সমাবেশ?
যুক্তবর্ণ নিয়ে আমাদের চলতি ধারণা এতে বেশ ধাক্কা খায় আসলে যে সব যুক্তবর্ণ আমরা দেখে অভ্যস্ত তার সত্যিই কি অস্তিত্ব আছে? এককালে যুক্তধ্বনি বোঝাবার জন্য মানুষ হরফের উপরে হরফ চাপাত, নইলে মানুষ তাদের ধ্বনি সংযুক্তি বুঝতে বা অনুভব করতে পারত না প্রাচীন মিশরের লেখায়ও এমন দেখা যায় পরে মানুষের মেধা বিকশিত হবার ফলে মানুষ হরফ পাশাপাশি বসিয়েই তাদের ধ্বনি সংযুক্তি অনুভব করতে বা বুঝতে শিখল Stop, Blend, Drop, Frog ইত্যাদি শব্দে স্ট, ব্ল, ড্র, ফ্র ইত্যাদি যুক্তধ্বনি হয়েছে, কিন্তু তা হরফের দলা করে লেখা হয়নি বর্ণ-সমাবেশ/হরফ পাশাপাশি লিখেই তা বোঝা, এবং বোঝানো গেছে ইংরেজির এই যে উত্তরণ বাংলায় তা এখনও আমরা স্পর্শ করতে পারিনি ইংরেজিতে কিছু কিছু দলা পাকানো মণ্ড হরফের উদাহরণ অবশ্য এখনও রয়ে গেছে, যেমন__ & Æ æ Œ œ, বাংলায় কিন্তু রয়ে গেছে সবটাই আমরা এবার এগোবার কিছুটা চেষ্টা করিনা কেন? ইংরেজিতে লেখার, টাইপ করার যে বিপুল সুবিধা তা আমরা কবে লাভ করব?
১৯৯৮তে একুশে ফেব্রুয়ারি একটি বাংলা সফ্টওয়্যার তৈরি করার কথা একুশে স্মরণ সভায় জানাই সেটি ছিল ডস(DOS)-এ করা সফ্ট, তা দিয়ে ভালো কাজ করা যেত না
পরে অবশ্য উইন্ডোজ এলে অন্য বাংলা সফ্ট বানানো হয়, সেগুলি ছিল নন-ইউনিকোড ফন্ট
নন-ইউনোকোডে এই বিশেষ ফন্ট ছাড়াও সাধারণ ফন্টও করা হয়েছে
আরও পরে বাংলা ইউনিকোড ফন্ট তৈরি হয় এই নিবন্ধটি সেই ফন্টেই লেখা
বাংলা ধারক বাক্যটি পরে আরও সংশোধিত হয়, সেটির বর্তমান রূপ:__
বাংলা ইউনিকোড ওপেন টাইপ ইউ.আই. ফন্ট ’নতুন-কলম৯১‘ ফন্ট
ধারক বাক্য: কি-বোর্ড সড়গড় হবার জন্য, এবং নিবিড় অনুশীলনের জন্য একটি বাক্য লিখে দেখানো হল, যেখানে বাংলা সকল স্বরবর্ণ, সকল ব্যঞ্জন বর্ণ, সকল স্বর চিহ্ন, সকল(৮টি) ফলা এবং সংখ্যা দেখানো আছে
বিষণ্ণ ঔদাসীন্যে ঊষাবৌদি বাংলাভাষায় প্রচলিত ঈশপের নিখুঁত গল্পটির অর্ধেক বলতেই ঋতু ভুঁইঞা আর ঐন্দ্রিলা দারুণ হৈ-হৈ করে উঠল-- ওঃ, ব্যাস্ এবার থামো বুঝেছি বড্ডো পুরানো ঢঙের কেমন এক গল্প যার নীতি বাক্য হল--"মূঢ় আড়ম্বর ও আত্মশ্লাঘার ফল জীবনে বিঘ্ন ও বৃহৎ ক্ষতি"--তাই না, এ্যাঁ ?
০১২৩৪৫৬৭৮৯ ৳৫৬/-
(এই বাক্যটি বহুবার টাইপ করে অভ্যাস করলে কি-বোর্ডে সাবলীল হওয়া যাবে
সংশোধিত বাক্যটি বিশেষ করে বাংলা ইউনিকোড ফন্ট পরীক্ষার জন্য প্রয়োজন )
বাংলায় দুটি মাত্র মণ্ড হরফ থাকবে-- ক্ষ জ্ঞ বাংলা সকল সম্ভাব্য যুক্তবর্ণ লিখে পরীক্ষা করা হয়েছে।
=========================
নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে--
১) সারস্বত -- জুলাই-সেপ্টেম্বর ১৯৭৫ (শারদ সংকলন)
২)আজকাল-- ২১/০২/১৯৮৪ (দৈনিক সংবাদপত্র)
৩)প্রসঙ্গ:বাংলাভাষা-- ২০/০৫/১৯৮৬
(পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি প্রকাশিত প্রথম সংকলন গ্রন্থ)
-- ০০ --
বৃহস্পতিবার, ৪সেপ্টেম্বর, ২০০৮
বৃহস্পতিবার, ৪সেপ্টেম্বর, ২০০৮
============================
সবটা ঠিক ঠিক পড়তে হলে সংগে দেওয়া লিংক থেকে ফন্ট ফ্রি ডাউনলোড করে নিতেবিনামূল্যে সর্বান্তিক বাংলা ইউনিকোড ফন্ট সরাসরি ডাউনলোড করুন নীচের এই লিংকে ক্লিক করে
উন্নত বাংলা ফন্ট
সর্বান্তিক ‘অহনলিপি-বাংলা১৪’ ফন্টে পড়তে হবে
বিনামূল্যে ফন্ট ডাউনলোড লিংক:--
https://sites.google.com/site/ahanlipi/font-download/AhanLipi-Bangla14.zipবিনামূল্যে ফন্ট ডাউনলোড লিংক:--
ইউনিকোড ফন্ট ডাউনলোড করার লিংক উপরে দেওয়া হল
লিংকে ক্লিক করুন ফন্ট ডাউনলোড হবে
যুক্তবর্ণ সরল গঠনের
বুঝতে লিখতে পড়তে সহজ
যুক্তবর্ণ সরল গঠনের
বুঝতে লিখতে পড়তে সহজ
============================
----------------------------
----বাংলা
ইঞ্জিনীয়ারিং
বর্ণমালা
নতুন বানান__ বাংলা ইঞ্জিনিয়ারিং বর্ণমালা
মনোজকুমার
বাংলা বর্ণমালার জ্যামিতিক রূপ হল__ বাংলা ইঞ্জিনিয়ারিং বর্ণমালা ঠিক যেমন ইংরেজির ক্যাপিটাল লেটার সহজে এবং পরিচ্ছন্নভাবে লেখা এবং ছাপার কাজে এগুলির ব্যবহার হতে পারে ইঞ্জিনিয়ারিং ড্রইং শিক্ষার শুরুতে এগুলিরই লেটার ড্রইং করা হয় বাংলা মুদ্রণের কাজে যদি এই বাংলা ইঞ্জিনিয়ারিং বর্ণমালা ব্যবহার করা হয়, তবে তা মুদ্রণ তথা প্রাসঙ্গিক ব্যয় প্রায় ৩০/৪০ শতাংশ কমাতে পারবে
ইংরেজি হরফগুলির যেমন ক্যাপিটাল গঠন আছে, বাংলা হরফগুলির তেমন কিছু নেই বিভিন্ন কৌণিক বা বৃত্তাকার গঠনের জন্য বাংলা হরফগুলির স্কেল ড্রইং করা কঠিন তাছাড়া, বাংলায় হরফ বেশি, স্বরচিহ্ন তথা কারচিহ্ন ইত্যাদি আছে এছাড়া আছে যুক্তবর্ণের সমুদ্র ইংরেজিতে যেমন অল্প হরফ এবং সংখ্যা হলেই কাজ চলে, বাংলায় কিন্তু হরফ দরকার তার চেয়ে অনেক বেশি
সংশোধিত এবং যুক্তিসংগত পদ্ধতি গ্রহণের ফলে বাংলায় মোট (১১+৩৯ +৯+৩ +১+৭=)৭০টি (অর্থাৎ কার্যকর ভাবে স্বরবর্ণ-১১, ব্যঞ্জনবর্ণ-৩৯, স্বরচিহ্ন- ৯, ফলাচিহ্ন-৩, সংযুক্ত হরফ-১, সংখ্যা-৭; এই মোট ৭০টি) হরফ গঠন হলে কাজ চলবে
ইঞ্জিনিয়ারিং ড্রইং করতে হলে লেটার ড্রইং বা অক্ষরাঙ্কন দিয়ে শুরু করতে হয় বর্তমানে বাংলার মাধ্যমে পড়াশুনা শুরু হয়েছে, তাই বাংলা বর্ণাঙ্কনও দরকার হয়ে পড়েছে স্কেল বা অন্যান্য ইঞ্জিনিয়ারিং যন্ত্রপাতি যেমন সেটস্কোয়ার, টি, কম্পাস ইত্যাদি দিয়ে আঁকার জন্য বাংলা বর্ণমালার এক সরল রৈখিক জ্যামিতিক রূপ দেওয়া হয়েছে, এই বিশেষ রূপকেই বলা হয়েছে_ বাংলা ইঞ্জিনিয়ারিং বর্ণমালা
বাংলা বর্ণমালার জ্যামিতিক রূপ দিতে গিয়ে বেশ কিছু বিভিন্ন ধরনের জটিল সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল যেমন__
(এক) একই মাপ__ সমস্ত হরফগুলি একই পরিমাপে আনা হয়েছে কিন্তু সকল হরফগুলিকে একই পরিমাপে আনা ছিল সবচেয়ে কঠিন কাজ কারণ হরফগুলির সাধারণ গ্রহণীয়(common) মাপ যে কী হবে তা নির্ধারণ করতে গিয়ে প্রায় সকল হরফেরই বহুবিধ রূপ অঙ্কন করতে হয়েছে অবশেষে এই হরফগুলির সাধারণ গ্রহণীয়(common) মাপ নির্ধারিত হয়েছে_ ৬×৭, তথা ৬:৭, অর্থাৎ গ্রাফ পেপারে ছয় ঘর উচ্চতা এবং সাত ঘর দৈর্ঘ্য (বা প্রস্থ) তথা পাশে ৭ ঘর নিতে হবে
(পরবর্তীকালে এই গঠনকে সামনে রেখে বাংলা হরফের আরও অনেক বিচিত্র রূপ দেওয়া হয়েছে, যা এর আগে দেওয়া সম্ভব ছিল না এই রূপগুলিকে দেখতে হলে এগুলি ফ্রি ডাউনলোড করে নিজের কম্পিউটারের উইন্ডোজ ফন্ট ফোল্ডারে ভরে(Load)/ঢুকিয়ে নিতে হবে নীচে উল্লেখ করা নিবন্ধটির সঙ্গে ফন্টগুলি আছে, যদিও অবশ্য তা বাংলা ইউনিকোড ফন্ট তৈরির পদ্ধতি নিয়ে লেখা যাঁরা এব্যাপারে উৎসাহী তাঁরা অবশ্যই দেখুন
লিংক: http://www.srishtisandhan.com/Also read the article on how to use the Bengali Unicode fonts [Download >>] সৃষ্টিসন্ধান.কম/নিজে ইউনিকোড ফন্ট তৈরি করুন ডাউনলোড )
এটা হল মূল বর্ণগুলির মাপ, অতিরিক্ত অংশ তথা বাহুগুলি এই মাপের বাইরে যেমন ক-এর আঁকড়ি
ছককাটা কাগজ বা গ্রাফ পেপারে ব্যাপারটি করে দেখা যাক__
বাংলা ইঞ্জিনিয়ারিং বর্ণমালা অঙ্কনের সমগ্র এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে কয়েক বছর সময় লেগেছে
(দুই) বর্গাকৃতি রূপ__ বাংলা লিপিগুলি বৃত্ত, উপবৃত্ত, বা ত্রিকোণ সহ বিভিন্ন কৌণিক গঠনকে বর্গাকৃতি রূপে আনা হয়েছে ফলে আঁকা বা লেখা সহজতর হবে
(তিন) দুটি সমান্তরাল সরল রেখার মধ্যে আঁকা__ বাংলা লিখন পদ্ধতিতে স্বরচিহ্ন অর্থাৎ আ-কার, ই-কার ইত্যাদি এবং ফলা বা যুক্তবর্ণ ইত্যাদির ব্যবহার এমন যে, উপরে নিচে, পাশে এসব বিভিন্ন-স্থানে চিহ্ন বা হরফ বসাবার জন্য লিখন তথা মুদ্রণস্থান খুব বেশি লাগে প্রস্তাবিত ব্যবস্থা বা পদ্ধতিতে সবকিছু লেখা হবে পাশাপাশি লাইনোটাইপে কম্পোজিং পদ্ধতি অনেকটা এই রকম এখন অবশ্য লাইনোটাইপ আর ব্যবহৃত হয় না এই হরফে পাশাপাশি ভাবে লিখন ব্যব্সথায় মুদ্রণস্থান লাগবে অনেক কম, যদিও মনে হবে যে মুদ্রণস্থান বেশিই লাগবে মুদ্রণস্থান কম লাগার অন্য কারণ আছে, সেটি আছে হরফের গঠনে বিশেষ বৈশিষ্ট্যে
বর্তমানে এক সেমি. উচ্চতার হরফে মুদ্রণ-উচ্চতা লাগে দুই সেমি এই প্রস্তাবিত পদ্ধতিতে এক সেমি উচ্চতার হরফে মুদ্রণ-উচ্চতা লাগবে এক সেমিই মাত্র
প্রস্তাবিত পদ্ধতিতে যুক্তবর্ণ লেখার প্রচলিত ধারার কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে, মুদ্রণ-উচ্চতা বা মুদ্রণস্থান কম লাগার রহস্যটা সেখানে বাংলা লেখার বর্তমান পদ্ধতি হল ত্রিস্তর(Three-Tier) বাংলা ইঞ্জিনিয়ারিং হরফে বাংলা লেখার পদ্ধতি দাঁড়াবে মাত্র এক স্তর(Monotier) স্থান সংকোচন সে কারণেই ঘটবে
বাংলা নতুন এই হরফ-গঠনের বর্ণ দিয়ে যুক্তবর্ণ তৈরি করতে দুটো বা তিনটে হরফ একত্রে জুড়ে নতুন আকৃতির বা প্রায়-নতুন অক্ষর তৈরি করতে হবে না এখানে হরফের বিকৃত বর্ণ-সমন্বয় করা হবে না যুক্তবর্ণের হরফগুলি বিশেষ কায়দায় পাশাপাশি লেখা হবে যুক্তবর্ণ তৈরি হবে ”বর্ণসমবায়“ পদ্ধতিতে, অর্থাৎ ছোট এবং বড় হরফ পাশাপাশি বসিয়ে বর্তমানের প্রচলিত পদ্ধতি মতো যুক্তবর্ণগুলি লিপ্তলিপি বা মণ্ড হরফ হয়ে উঠবে না যুক্তবর্ণের সূত্রদুটি হবে__ C1C2 এবং C1C1C2, যেখানে C=Consonant তথা ব্যঞ্জনবর্ণ C1= যুক্তবর্ণের লঘু প্রথম সদস্য/সদস্যগণ, C2= যুক্তবর্ণের গুরু তথা বড় শেষ সদস্যটি সকল বর্ণই কিন্তু হবে পূর্ণাঙ্গ, অখণ্ড, অমণ্ডীকৃত বা অলিপ্ত, অবিকৃত, পৃথগাঙ্গ, স্পষ্ট এবং যথাযথ সোজা কথায় যুক্তবর্ণ দলাপাকানো মণ্ড হরফ হবে না যুক্তবর্ণের সকল বর্ণই মাত্রার দিক ঘেঁষে পাশাপাশি বসবে যুক্তবর্ণের লঘু পূর্ব হরফ/গুলি তথা C1-এর আয়তন হবে ২/৩C2, অর্থাৎ C1 হবে যুক্তবর্ণের শেষ বর্ণটির(গুরু বর্ণটির) তথা C2-এর দুই-তৃতীয়াংশ যুক্তবর্ণের কোনও সদস্যই হাফ-বডি টাইপ হবে না বর্ণলিপ্তি হল বাংলা যুক্তবর্ণের এক বিষাদ চিত্র
বিশেষ ব্যতিক্রম হবে কেবলমাত্র ’ক্ষ‘ বর্ণটির ক্ষেত্রে এছাড়া, তিনটি ফলা চিহ্ন-- য-ফলা(য্), রেফ( র্ ), র-ফলা( ঢ়্ণ্র ) ব্যতিক্রম হিসেবে বজায় থাকবে
(চার)হরফের মাত্রা__ অক্ষর/বর্ণ/লিপি/হরফ থেকে মাত্রা বর্জিত হয়েছে জায়গা বেশি নেওয়া ছাড়া এখানে মাত্রার আর কোনও ভূমিকা নেই তাছাড়া, হরফ অঙ্কনেও তা জটিলতা সৃষ্টি করে, তাই বাংলা ইঞ্জিনিয়ারিং বর্ণমালা বা বাংলা কারিগরি বর্ণমালা থেকে মাত্রা বর্জন করা হয়েছে
(পাঁচ) বাছাই__ অঙ্কিত বর্ণগুলির মধ্য থেকে বিভিন্ন কৌণিক, বৃত্ত, উপবৃত্ত আকৃতি এবং শৌখিন গঠন ও অতীব সুন্দর লিপিরূপ থেকে বাছাই করে নির্দিষ্ট শর্তাধীন বর্ণগঠনটি কেবলমাত্র এখানে গ্রহণ করা হয়েছে সেকারণে প্রক্রিয়াটি ক্ষেত্রবিশেষে প্রবল মানসিক পীড়াদায়ক ছিল বর্ণের গঠন মনোরম হয়েছে অথচ সেটিকে গ্রহণ করা যায়নি, নির্দিষ্ট শর্ত অনুযায়ী সেটি গঠিত নয় বলে, তাই সেটি বর্জন করতে হয়েছে, ফলে তা প্রবল মানসিক পীড়ার কারণ ঘটিয়েছে
বাংলায় বর্ণাঙ্কন নেই, এবং সম্ভবত কোনও ভারতীয় ভাষাতেই নেই, তাই সকল হরফ একটি বাক্যে ব্যবহার করে কোনও বাক্যও(ইংরেজিতে যাকে বলে প্যানগ্রাম Pangram) নেই[A pangram (Greek: pan gramma, "every letter"), or holoalphabetic sentence, is a sentence using every letter of the alphabet at least once.] ইংরেজিতে এমন বাক্য হল__ A quick brown fox jumps over the lazy dog. বাংলায় এমন একটি বাক্য তৈরি করা হল যদিও বাক্যটি মোটেই সাবলীল নয়, কারণ বাংলায় হরফ অনেক বেশি হওয়ায় তা একটি বাক্যে ধরা বেশ কঠিন, আর তার আয়তনও অনেক বড় হবে বাংলাদেশের একটি ওয়েব ব্লগে/ব্লগ সাইটে(বাংলা ভাষা, আবু জার মোঃ আককাস ), এবং জিকোবাজি(ইশতিয়াক জিকোর ব্লগ) বলা হয়েছে বাক্যটি বেশ আড়ষ্ট ঠিকই, তবু যে সেটি আদৌ বোধ্য হয়েছে সেটাই বড় কথা, ভয় ছিল সেটি নিতান্ত দুর্বোধ্য না হয়ে পড়ে বাক্যটির প্রধান উদ্দেশ্য কম্পিউটার কিবোর্ডে সড়গড় হওয়া অবশ্য যখন বাক্যটি তৈরি করা হয় সেই
১৯৭০-এ কম্পিউটার ছিল না, ছিল টাইপরাইটার, এখন যে টাইপরাইটার ক্রমে অচল হয়ে পড়ছে হরফ অঙ্কনের কালে অভ্যাস করার জন্য এরকম বাক্য দরকার হয়, এটি গঠনের সেটিই মূল প্রণোদনা
নীচে যে ধারক বাক্যটি দেখানো হল, সেখানে বাংলা সকল হরফ তথা সকল স্বরবর্ণ, সকল ব্যঞ্জনবর্ণ, সকল স্বরচিহ্ন/কারচিহ্ন, সকল (আটটি) ফলা এবং সংখ্যা ইত্যাদি সবই আছে অর্থাৎ স্বরবর্ণ-১১, ব্যঞ্জনবর্ণ-৩৯, স্বরচিহ্ন-১০, ফলাচিহ্ন-৮, সংযুক্ত হরফ-১, এছাড়া, কমা, ড্যাশ, প্রশ্নচিহ্ন, হাইফেন, হস্চিহ্ন
__এই মোট ৭৪টি রূপ ব্যবহার করা হয়েছে আর যুক্তবর্ণ গঠনের নতুন পদ্ধতিও এখানে দেখানো হয়েছে এটি দেখার জন্য যে ফন্ট সাপোর্ট দরকার অর্থাৎ এই নির্দিষ্ট ফন্টটি দরকার তা পাবেন নীচে দেখানো লিংক থেকে, এবং তা বিনামূল্যে লাউনলোড করার সুবিধা সহ__
লিংক: http://www.srishtisandhan.com/A Bengali Unicode font utility [Download >>] সৃষ্টিসন্ধান.কম/ফন্ট ডাউনলোড
ধারক বাক্যটি নীচে দেখানো হল এটি বিশাল মিলিমিটার গ্রাফশিটে আঁকা হয়েছে, কালো (চাইনিজ) কালি দিয়ে তারপরে এটি মাইক্রো ফিল্ম থেকে নেওয়া ফটোপ্রিন্ট সেখান থেকে স্ক্যানারে ধৃত চিত্র
লিখনটি হল:__
-------বাংলা ইনজিনীয়ারিং বর্ণমালা
বিষণ্ণ ঔদাসীন্যে ঊষাবৌদি
বাংলাভাষায় প্রচলিত ঈশপের
নিখুঁত গল্পটির অর্ধেক
বলতেই ঋতু ভুঁইঞা আর
ঐন্দ্রিলা হৈ-হৈ করে উঠল-
ওঃ, থামো বুঝেছি বড্ডো
পুরানো ঢঙের গল্প- মূঢ়
আড়ম্বর ও আত্মশ্লাঘার ফল
জীবনে বিঘ্ন ও বৃহৎ ক্ষতি-
এই নীতি যার না?
মিত্র মনোজ ১২৩৪৫৬৭৮৯০ ১ ২ ৩ ৪ ৫ ৬ ৭ ৮ ৯ ০
বাংলা ভাষা বন বাংলা
শেষ সারিতে যে হরফগুলি আছে তার প্রথমে লেখা, ’বাংলা ভাষা‘ এটি হেলানো লেখা এবং হরফের কোণাগুলি গোল করে দেওয়া
পরের লেখাটি ’বন‘ এটি দেখানো হয়েছে গ্রাফে কেমন করে হরফ আঁকা হয় তার উদাহরণ
আর শেষে লেখা ’বাংলা‘
লেখাটি দেখানো হয়েছে ত্রিমাত্রিক করে, শুধুমাত্র ছায়াপাত ঘটিয়ে মূল হরফটি কিন্তু লেখা হয়নি ছায়ার সাহায্যে ”বাংলা“ শব্দটি লেখা মূল লেখাটি অনেক বড়, এখানে খুব ছোট করে ছেপে সাঁটা হয়েছে এই পদ্ধতিতে অনেক বিচিত্র করে বাংলা হরফ আঁকা যায়, যা মনে এক-এক ধরনের অনুভূতি জাগাবে তাদের বিচিত্র রূপে ইংরেজি হরফ অঙ্কনে এরকম অনেক অনেক বিচিত্র উদাহরণ আছে বাংলায় যার অনেকটাই এতকাল সম্ভব ছিল না উপরে দেওয়া লিংক থেকে অন্যান্য হরফ ডাউনলোড করে তার কিছুটা আভাস পাওয়া যাবে
চিত্রটি লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে, সংখ্যাগুলি প্রথমে লেখা হয়েছে একরেখা(Single Stroke) করে ’বাংলা ভাষা‘ শব্দটি লেখা হয়েছে ৬০৹ ডিগ্রি কোণ করে হেলিয়ে(Inclined) শেষের ”বাংলা“ শব্দটি লেখা ত্রিমাত্রিক(3-Dimentional) করে আর প্রদর্শিত বাকি সব লেখাগুলিই দ্বিরেখা(Double Stroke) করে লেখা এখানে ণ্ণ যুক্তবর্ণটিতে দুটি ণ পাশাপাশি আছে, এখানে যুক্তবর্ণ দলা পাকায় না, তাই ণ পৃথকভাবে দেখানো নেই
বাংলা হরফগুলির গঠন, লেখার রীতি, যুক্তবর্ণ ইত্যাদি একটু মন দিয়ে খেয়াল করলেই স্পষ্ট হবে তা কেন, এবং কেমন ভাবে গঠিত
এখানে হরফের এক্স-হাইট বড়, ফলে লেখা বড় হবে, পড়া সহজ হবে হরফের যা উচ্চতা সেই উচ্চতার সীমারেখায় কাল্পনিক ভূ-সমান্তরাল দুটি সরলরেখার মধ্যে লেখার সকল হরফ, চিহ্ন ইত্যাদি রাখা হয়েছে ই-কার, ঈ-কার, উ-কার, ঊ-কার কিংবা রেফ র-ফলা, ব-ফলা ইত্যাদিও সব সেই পরিসরের মধ্যেই আঁটানো হয়েছে চলতি অভ্যাসে তা আঘাত করবে ঠিকই, কিন্তু বাংলা লেখাকে তা অনেক দিকে সঞ্চারিত করে দেবে
বাংলা হরফের এবং লেখার মূল কাঠামোটিকে এখানে মোটামুটি অক্ষত রাখা হয়েছে বড় পরিবর্তন হয়েছে যুক্তবর্ণ গঠনে যা অনেক যুক্তিভিত্তিক ও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে পড়ার পক্ষে তা অনেক সহজ হবে তবে এভাবে হাতে করে লেখা সহজ হবে না, হাতের লেখা যেমন চলছে তেমনই চলতে পারে ইংরেজিতেও ক্যাপিটাল লেটারে হাতে করে লেখা হয় না, হাতের লেখা মূল ছাপার লেখা থেকে অনেক আলাদা
লেখা জটিলতামুক্ত বলে খুব ছোট টাইপেও লেখা পড়া যাবে, আবার হরফের এক্স-হাইট বড় বলে সে লেখা বড়ই দেখাবে, অর্থাৎ সোজা করে বললে লেখার পাঠযোগ্যতা(Legibility) বাড়বে
বাংলায় ই-কার, ঈ-কার, উ-কার, ঊ-কার রেফ, র-ফলা, ব-ফলা ইত্যাদি চিহ্ন হরফের মাত্রাকে ছাপিয়ে উপরে ওঠে, এবং তলার রেখার নীচে চলে যায়, যে কারণে বাংলা হরফের এক্স-হাইট বড় হয় না এখানে সেই অসুবিধে নেই বলে হরফের এক্স-হাইট প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে ফলে বড় লেখা পড়তে পারা যাচ্ছে সহজে, অথচ তা লিখতে জায়গা লাগছে কম এখানে হরফের উচ্চতা এক সেমি হলে তা দিয়ে লিখতে এক সেমি উচ্চতাই লাগছে স্থান সংকোচন তাই আপাত মনে হচ্ছে ৫০%শতাংশ কিন্তু হিসেব করে দেখা গেছে যে, পাশের দিকে চিহ্নাদির সম্প্রসারণের ফলে তা ৫০ শতাংশ না থেকে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ হয়ে যাচ্ছে
ছাপায় জায়গা কম লাগার মানে কাগজ কম লাগবে, বই কম দামে পাওয়া যাবে, ফলে লেখাপড়ার বিস্তার ঘটবে কিছুটা সহজে যদিও এখন কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের যুগে এমন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে যে, কাগজ আর প্রায় লাগবেই না, লক্ষ লক্ষ পাতা লেখা যাবে কাগজ ছাড়াই! তবু যাঁরা ইন্টারনেট ব্যবহার করেন তাঁরা ভুক্তভোগী__ কম্পিউটার স্ক্রিনে বাংলা লেখা প্রায় পড়াই যায় না, এতই তা ছোট লেখা বিশেষ করে বাংলা সিস্টেম-ফন্ট ”বৃন্দ“-তে পড়া বড়ই কঠিন অথচ ইংরেজি লেখা খুব ছোট হলেও পড়া কঠিন নয় তার মূলে সেই হরফের এক্স-হাইট বাংলায় যা খুবই কম
পাঠকদের অবগতির জন্য জানাই, আমার করা ”নতুন-কলম৯১“ বাংলা ইউনিকোড ফন্টটিতে হরফের এক্স-হাইট অনেকটা বড় করা হয়েছে যদিও তা সাধারণ চলতি হরফই তাই নেটে তা পড়তে বেগ পেতে হয় না তবে এখানে নতুন পদ্ধতি অনুসরণ করে, বাংলা যুক্তবর্ণ লজিক্যাল করা হয়েছে
তখন ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দ সবে ডেস্কটপ পিসি চালু হয়েছে, কোলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটারে বাংলা লেখার ব্যবস্থা করার জন্য পিএইচডি গবেষণা করছিলেন ছাত্র সমর ভট্টাচার্য তিনি বাংলা এই কারিগরি হরফগুলিকে তার গবেষণার চেষ্টার ফল অনুধাবন করার জন্য কিছু শব্দের কম্পিউটার রূপ দিলেন লেখা হল_- ’বই পড়ুন‘(২৫.০৯.১৯৮২)
কয়েক বছর পরে আবার লেখা হল__ ’অম্বা‘(১৫.০৬.১৯৮৫)
সেখানে বাংলা চর্চার জন্য ’বর্ণচর্চা‘ নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলা হয়েছিল ডঃ তপন ঘোষাল, ডঃ পবিত্র সরকার, অশোক মুখোপাধ্যায়, দীপঙ্কর সেন প্রমুখ খ্যাতকীর্তি ব্যক্তিদের সঙ্গে বর্তমান লেখকও অন্তর্ভুক্ত ছিল
সমর ভট্টাচার্য প্রথম বাংলা লেখার সফ্টওয়্যার ”বিদ্যাসাগর“ তৈরি করে পিএইচডি হন যদিও তা শেষ অবধি বাজারে আসেনি
বাংলা লেখার সব চেয়ে জটিল দিকটি হল এর যুক্তবর্ণ বাংলায় প্রায় ৩৫৬ ৩৯৫টি বিশুদ্ধ যুক্তবর্ণ আছে, তার ৫৭ ৫৬টি সান্দ্রধ্বনি, অর্থাৎ তা বিশ্লিষ্ট করে উচ্চারণ করা যাবে না তবে সবগুলিকেই সরল স্পষ্ট যুক্তবর্ণ করে লেখা যাবে পদ্ধতিটি হবে ’বর্ণসমবায়‘ পদ্ধতি কেবল দুটি যুক্তবর্ণকে মণ্ডহরফ করে লেখা হবে, সে দুটি হল__ ক্ষ, জ্ঞ
যদি লেখা হয়__ ’বিস্তর পুস্তক দোস্তকে সস্তায় গস্তায়‘ তবে তা বিশ্লিষ্ট করে উচ্চারণ করা যাবে, লেখাও যাবে তবে, ’স্তরে স্তরে স্তম্ভিত মেঘস্তূপ‘ বাক্যে ”স্ত“ বিশ্লিষ্ট করে উচ্চারণ করে যাবে না, কারণ এটি ’দল‘ তথা সিলাবেলের(Syllable) প্রথমে অবস্থান করছে
বিস্তর লেখা যাবে বিস্তর, এবং বলাও যাবে বিস্তর, কিন্তু স্তর কখনও স্তর লেখা চলে না, বলাও চলে না এটা অবশ্য এই আলোচনার ক্ষেত্র নয়, এটি ভাষাতত্ত্বের বিষয় কিন্তু লেখার বিষয়টি সর্বত্র সমানভাবে প্রসারিত হওয়া চাই, তাই এটিও আলোচনায় এসে পড়ে তবে বাংলা কম্পিউটার সফ্টওয়্যার তৈরির সীমাবদ্ধতার জন্য কোনও কোনও সময়ে এরকম করে লিখতেও দেখি বিশেষ করে বিদেশি নাম বা স্থানের বানানে যদি যুক্তবর্ণ গঠনকে মুক্ত সমাবেশ করে রাখা যায়, তথা যুক্তবর্ণকে ’বর্ণসমবায়‘ পদ্ধতিতে লেখা হয়, তবে এই সমস্যা হবে না মনে রাখতে হবে যে, তা নাহলে প্রতিটি মণ্ড হরফ বাংলা ফন্টের UI (Unnumbered Information frame)ভাণ্ডারে সঞ্চিত রাখতে হয়, যেটা নানা কারণে হয়ে ওঠে না, ফলে কাজের সময়ে বিপদে পড়তে হয় ফলে সংশোধন না হওয়া অবধি তা দিয়ে সঠিক লেখা যাবে না আর বাংলায় সঠিক যুক্তবর্ণ কিংবা মণ্ড হরফ যে ক‘টি তা-ই তো স্পষ্ট নয় যদিও আমি এর বিস্তারিত তালিকা এক কালে তৈরি করেছি, কিন্তু তা অনেকটাই অনিশ্চিত ধরি, একটা শব্দ ’টঙ্কার‘ লেখা যাবে টংকার সে ক্ষেত্রে ঙ্ক দরকার নেই, কিন্তু কেউ যদি তা ’ঙ্ক‘ দিয়ে টঙ্কার লিখতে চান তবে তাকে বাধা দেওয়া যায় না ফলে যুক্তবর্ণ বা মণ্ড হরফ ঙ্ক তৈরি রাখতে হবে আবার এই প্রশ্ন আসে যে ”ংক“ তবে কি যুক্ত বর্ণ? না কি তা কেবলই বর্ণ-সমাবেশ?
যুক্তবর্ণ নিয়ে আমাদের চলতি ধারণা এতে বেশ ধাক্কা খায় আসলে যে সব যুক্তবর্ণ আমরা দেখে অভ্যস্ত তার সত্যিই কি অস্তিত্ব আছে? এককালে যুক্তধ্বনি বোঝাবার জন্য মানুষ হরফের উপরে হরফ চাপাত, নইলে মানুষ তাদের ধ্বনি সংযুক্তি বুঝতে বা অনুভব করতে পারত না প্রাচীন মিশরের লেখায়ও এমন দেখা যায় পরে মানুষের মেধা বিকশিত হবার ফলে মানুষ হরফ পাশাপাশি বসিয়েই তাদের ধ্বনি সংযুক্তি অনুভব করতে বা বুঝতে শিখল Stop, Blend, Drop, Frog ইত্যাদি শব্দে স্ট, ব্ল, ড্র, ফ্র ইত্যাদি যুক্তধ্বনি হয়েছে, কিন্তু তা হরফের দলা করে লেখা হয়নি বর্ণ-সমাবেশ/হরফ পাশাপাশি লিখেই তা বোঝা, এবং বোঝানো গেছে ইংরেজির এই যে উত্তরণ বাংলায় তা এখনও আমরা স্পর্শ করতে পারিনি ইংরেজিতে কিছু কিছু দলা পাকানো মণ্ড হরফের উদাহরণ অবশ্য এখনও রয়ে গেছে, যেমন__ & Æ æ Œ œ, বাংলায় কিন্তু রয়ে গেছে সবটাই আমরা এবার এগোবার কিছুটা চেষ্টা করিনা কেন? ইংরেজিতে লেখার, টাইপ করার যে বিপুল সুবিধা তা আমরা কবে লাভ করব?
১৯৯৮তে একুশে ফেব্রুয়ারি একটি বাংলা সফ্টওয়্যার তৈরি করার কথা একুশে স্মরণ সভায় জানাই সেটি ছিল ডস(DOS)-এ করা সফ্ট, তা দিয়ে ভালো কাজ করা যেত না
পরে অবশ্য উইন্ডোজ এলে অন্য বাংলা সফ্ট বানানো হয়, সেগুলি ছিল নন-ইউনিকোড ফন্ট
নন-ইউনোকোডে এই বিশেষ ফন্ট ছাড়াও সাধারণ ফন্টও করা হয়েছে
আরও পরে বাংলা ইউনিকোড ফন্ট তৈরি হয় এই নিবন্ধটি সেই ফন্টেই লেখা
বাংলা ধারক বাক্যটি পরে আরও সংশোধিত হয়, সেটির বর্তমান রূপ:__
বাংলা ইউনিকোড ওপেন টাইপ ইউ.আই. ফন্ট ’নতুন-কলম৯১‘ ফন্ট
ধারক বাক্য: কি-বোর্ড সড়গড় হবার জন্য, এবং নিবিড় অনুশীলনের জন্য একটি বাক্য লিখে দেখানো হল, যেখানে বাংলা সকল স্বরবর্ণ, সকল ব্যঞ্জন বর্ণ, সকল স্বর চিহ্ন, সকল(৮টি) ফলা এবং সংখ্যা দেখানো আছে
বিষণ্ণ ঔদাসীন্যে ঊষাবৌদি বাংলাভাষায় প্রচলিত ঈশপের নিখুঁত গল্পটির অর্ধেক বলতেই ঋতু ভুঁইঞা আর ঐন্দ্রিলা দারুণ হৈ-হৈ করে উঠল-- ওঃ, ব্যাস্ এবার থামো বুঝেছি বড্ডো পুরানো ঢঙের কেমন এক গল্প যার নীতি বাক্য হল--"মূঢ় আড়ম্বর ও আত্মশ্লাঘার ফল জীবনে বিঘ্ন ও বৃহৎ ক্ষতি"--তাই না, এ্যাঁ ?
০১২৩৪৫৬৭৮৯ ৳৫৬/-
(এই বাক্যটি বহুবার টাইপ করে অভ্যাস করলে কি-বোর্ডে সাবলীল হওয়া যাবে
সংশোধিত বাক্যটি বিশেষ করে বাংলা ইউনিকোড ফন্ট পরীক্ষার জন্য প্রয়োজন )
বাংলায় দুটি মাত্র মণ্ড হরফ থাকবে-- ক্ষ জ্ঞ বাংলা সকল সম্ভাব্য যুক্তবর্ণ লিখে পরীক্ষা করা হয়েছে।
=========================
নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে--
১) সারস্বত -- জুলাই-সেপ্টেম্বর ১৯৭৫ (শারদ সংকলন)
২)আজকাল-- ২১/০২/১৯৮৪ (দৈনিক সংবাদপত্র)
৩)প্রসঙ্গ:বাংলাভাষা-- ২০/০৫/১৯৮৬
(পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি প্রকাশিত প্রথম সংকলন গ্রন্থ)
-- ০০ --
লেবেলসমূহ: বাংলা কারিগরি বর্ণমালা
2টি মন্তব্য:
গুগলে ঘুরতে ঘুরতে আপনার ব্লগে আসা। পড়লাম। ভাল লাগল। বাংলা ভাষার উপর ব্লগ খুব একটা বেশি নেই। তাই দুয়েকটার খোঁজ পেলে ভাল লাগে। আমার ব্লগরোলে যুক্ত করব আজ কালের মধ্যে।
একটা প্রশ্ন ছিল। আপনিই কি মনোজকুমার মিত্র? প্রোফাইলে নাম মনোজকুমার ডি গিরিশ কেন?
কন্জাঙ্ক্ট-এর বাংলা মণ্ড হরফ বেশ হয়েছে। তবে প্যানগ্রামটি একটু 'আড়ষ্ট' হলেও তা-ই কিন্তু আমাকে ভাবিয়েছিল। সেই দ্যোতনায় অনুপ্রাণিত হয়ে আমি যা তৈরি করেছিলাম তাও কিন্তু আমার পছন্দ নয়। বাক্যটিতে ব্যাকরণের একটি ভুলও থেকে গেছে, শোধরাতে পারিনি।
আমার এক বন্ধু যার কাজ সফটওয়্যার লেখা তার এক প্রশ্নের উত্তরে পোস্টিংটি দিয়েছিলাম। তার পরেই ইশতিয়াক জিকো।
আমার ইমেল ajm.akkas@gmail.com, মেল পাঠালে খুশি হব। অনুমতি দিলে আপনার সাথে আরও কয়েকটা ব্যাপার আলোচনা করতে চাই। পরে। ভাল থাকবেন।
আজম আক্কাসের প্রশ্নের জবাবে জানাই 'মনোজকুমার দ. গিরিশ' আমার লেখক-নাম(Pen name) অনুসন্ধানের জন্য ধন্যবাদ (প্রশ্নের জবাব অবশ্য তাঁকে ইমেলে আমি আগেই দিয়েছি)
মনোজকুমার দ. গিরিশ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
এতে সদস্যতা মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন [Atom]
<< হোম