বৃহস্পতিবার, ৩০ জুলাই, ২০০৯

বাংলাচর্চা ৤ --- বৃহস্পতিবার, ৩০ জুলাই, ২০০৯







বাংলাচর্চা ৤ ---

বৃহস্পতিবার,

৩০ জুলাই, ২০০৯



===========================

বৃহস্পতিবার৤ বৃহস্পতিবার৤ বৃহস্পতিবার৤
===========================



ঠিক ঠিক পড়তে হলে সংগে দেওয়া লিংক থেকে ফন্ট ফ্রি ডাউনলোড করে নিতে হবে৤বিনামূল্যে সর্বান্তিক বাংলা ইউনিকোড ফন্ট সরাসরি ডাউনলোড করুন নীচের এই লিংকে ক্লিক করে৤

উন্নত বাংলা ফন্ট
সর্বান্তিক ‘অহনলিপি-বাংলা১৪’ ফন্টে পড়তে হবে৤

বিনামূল্যে ফন্ট ডাউনলোড লিংক:--
https://sites.google.com/site/ahanlipi/font-download/AhanLipi-Bangla14.zip

ইউনিকোড ফন্ট ডাউনলোড করার লিংক উপরে দেওয়া হল৤
লিংকে ক্লিক করুন ফন্ট ডাউনলোড হবে৤


যুক্তবর্ণ সরল গঠনের৤ ‎
বুঝতে লিখতে পড়তে সহজ৤ ‎


বাংলাচর্চা
 

অতি দূর পূর্বদেশের এই জল জঙ্গল জলৌকা(জোঁক) সমাকীর্ণ অঞ্চলে বহিরাগত আর্যরা এসেছে অনেক পরে৤ তাদের প্রভাব এতদ্ অঞ্চলে তাই কমই৤ বাঙালিরা মিশ্র জাতি৤ বহু জাতি গোষ্ঠীর রক্ত এসে মিশেছে বাঙালি জাতির মধ্যে৤ তাই বিশুদ্ধতার গর্ব, যা নিয়ে অন্য অঞ্চলের লোকেরা মাতামাতি করে তা বাঙালির নেই৤ এই না-থাকাটাই বাঙালির পক্ষে মঙ্গল৤ তাই বাঙালি বহু রক্তের মিশ্রণে মেধাসম্পন্ন জাতি হিসেবে গড়ে উঠেছে৤ নৃ-তাত্ত্বিক দিক থেকে বিচার করলে এই মিশ্রণ মেধার বিকাশে সহায়ক৤ বাঙালিরা তাই সহজ মেধা-সম্পন্ন জাতি৤ বাঙালির তাই সংকীর্ণতা নেই, সে তাই উদার এবং সহজে বিশ্বভারতীয় হয়ে উঠতে পেরেছে৤
প্রধান তিনটি জনশ্রেণি, সময়ের ক্রমানুসারে প্রথমে(১)অস্ট্রিক, তারপরে(২)দ্রাবিড়, শেষে(৩)মঙ্গোল সভ্যতা দ্বারা পুষ্ট হয়েছে বাঙালি, পরে তার উপরে সবার শেষে এসে পড়েছে (৪)আর্য প্রভাব৤ তাই বাঙালির মধ্যে সকল এই শ্রেণিরই প্রভাব দেখা যায়৤ লৌকিক সংস্কৃতি, আচার-আচরণ থেকে বিহিত পূজা-প্রকরণ সব কিছুর মধ্যেই তাই এসবের প্রভাব ফুটে উঠতে দেখা যায়৤ এসব বাঙালির অপার ঐতিহ্য৤ কোন একটি বিশেষ গোষ্ঠী বা নরশ্রেণি এবং একটি বিশেষ সংস্কৃতির সীমাবদ্ধতায় বাঙালি তাই আটকে নেই৤ বিশ্ব-মানবপুষ্টি ভারতীয় অন্য আর কোন জাতি-গোষ্ঠীর মধ্যে এতখানি নেই৤ লক্ষণীয় বিষয় হল, তবু বাঙালি নিজস্ব ভাষা সংস্কৃতি ও আপন বৈশিষ্ট্যে উজ্জ্বল৤
ভারতীয় সভ্যতা-সংস্কৃতিতে বাঙালির শিকড় তাই অনেক ব্যাপ্ত এবং গভীর৤ অনেক বিবর্তনের জোয়ার বয়ে গেছে তার এই নরম পলির উপর দিয়ে৤ তাই সব ঐতিহ্যের শিকড় তার মূলে বিধৃত৤ বৈষ্ণব পদাবলির অমিয় কবিকূল থেকে রবীন্দ্রনাথ, জীবনানন্দ, নজরুল, জসিম উদ্দিন, লালন, চারুশিল্পী যামিনী রায়, জয়নাল আবেদিন প্রমুখ এবং তিনটি নোবেল পুরস্কার(রবীন্দ্রনাথ, অমর্ত্য সেন, মুহাম্মদ ইউনুস), চলচ্চিত্রে স্পেশাল অস্কার পুরস্কার(সত্যজিৎ রায়, এবং ফ্রান্স থেকে ’লিজিয়ন অব অনার‘), সাংবাদিকতায় ম্যাগসাইসাই পুরস্কার(অমিতাভ চৌধুরি) তাই বাঙালির গৌরবের মুকুটে শোভা পায়৤

সংস্কৃত একটি উন্নত ভাষা, বলা হয়েছে, "Perfect" language, for all time এবং তার কাছে বাংলাভাষার ঋণ অপরিমেয়৤ কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, আমরা চিরকালই তার আঁচল ধরে চলব৤ বাংলাভাষীদের এবার একটু নিজের পায়ে, নিজের মেরুদণ্ডের উপর সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে৤ লতানে গাছ হয়ে আর কতকাল তার হামাগুড়ি দেওয়া চলবে? বাঙালিদের শৈশব যে আর কাটতেই চায় না৤
ইংরেজি ভাষা ”ইংরেজি“ হয়েছে __অর্থাৎ উন্নত ও আন্তর্জাতিক হয়েছে ইংরেজদের প্রাচীন ল্যাটিন ঝোঁক ত্যাগ করার পরে৤ তার আগে ইংরেজি ছিল সাধারণ অনাদৃত গাঁইয়া ভাষা৤ ’দি নিউ ক্যাক্সটন এনসাইক্লোপিডিয়া‘তে বলা হয়েছে[বাংলায় সরল অনুবাদে] __অষ্টাদশ শতকে সরল সাধারণ ইংরেজিতে লেখার ব্যাপারটা ছিল আটপৌরে ঘরোয়া ব্যাপার৤ যেন পরচুলো না-পরে নিজস্ব চুলেই সাজগোজ করা[সে যুগে পরচুলা ছিল অভিজাতদের নিয়মিত পোষাকের অঙ্গ]৤ ঊনবিংশ শতকে দেশি-ইংরেজি শব্দ জনপ্রিয়তা ফিরে পেল, তবে তা সংগ্রাম না-করে হয়নি৤(সংস্করণ- ১৯৭৯, খণ্ড-৭, পৃঃ-২৬৪)৤ বাংলায় তো সেই সংগ্রামের যুগটাই চলছে৤ ইংরেজিতে সংগ্রাম হয়েছে ঊনবিংশ শতকে, বাংলায় হচ্ছে বিংশ শতকের শেষ ও একবিংশ শতকের শুরুতে৤ এ লড়াইয়ে জয়ী হতেই হবে, তবেই বাংলাভাষা সর্বত্র প্রতিষ্ঠা ও প্রচার পাবে৤ বাংলা হয়ে উঠবে জীবিকার ভাষা৤ বাংলা হয়ে উঠবে বাণিজ্যের ভাষা, বিনোদনের ভাষা, জীবনের ভাষা৤ বাংলা হয়ে উঠবে হৃদয়ের ভাষা, বুকের ভাষা৤ ভাষাই তো জীবন-জীবিকার মূল হাতিয়ার(অবশ্যই সেটা রাষ্ট্রনৈতিক পৃষ্ঠপোষণ সাপেক্ষ)৤





-- ০০ --

লেবেলসমূহ: , ,