বাংলা লিখনের আজন্ম দুর্দশা ঘুচুক(৭টির) --৭ম
বাংলা লিখনের আজন্ম দুর্দশা ঘুচুক(৭টির) -৭ম
লেখাটি অহনলিপি-বাংলা১৪(AhanLipi-Bangla14) ফন্টে পড়তে হবে, নচেৎ লেখাটির বক্তব্য স্পষ্ট হবে না ফন্ট ডাউনলোড
সঙ্গে
দেওয়া ফাইল দেখে নিতে হবে
অহনলিপি-বাংলা১৪ ডিফল্ট টেক্সট ফন্ট সেটিং
(AhanLipi-Bangla14
Default text font setting)
Default
text font setting ডিফল্ট টেক্সট ফন্ট সেটিং
এবং
অহনলিপি-বাংলা১৪ ডিফল্ট ইন্টারনেট সেটিং
(AhanLipi-Bangla14 Default Internet
setting)
(Default font setting ডিফল্ট ফন্ট সেটিং)
on
internet(Mozilla Firefox)
(top
left) Tools
Options--contents
Fonts and Colors
Default font:=AhanLipi-Bangla14
Advanced...
Fonts for:
=Bengali
Proportional
= Sans Serif, Size=20
Serif=AhanLipi-Bangla14
Sans
Serif=AhanLipi-Bangla14
Monospace=AhanLipi-Bangla14, Size=20
-- OK
Languages
Choose your preferred Language for
displaying pages
Choose
Languages in order of preference
Bengali[bn]
-- OK
-- OK
এবারে
ইন্টারনেট খুললে ‘অহনলিপি-বাংলা১৪’ ফন্টে সকলকিছু দেখা যাবে নেটে এই ফন্টে সব কিছু লেখাও যাবে
বাংলা লিখনের আজন্ম দুর্দশা ঘুচুক-৭
মনোজকুমার
দ. গিরিশ
মণীশ
পার্ক, কোলকাতা
সপ্তম অংশ
শেষ অংশ
১৭৭৮-এ
হ্যালহেডের(A Grammar
of the Bengal Language by Nathaniel Brassey Halhed) সময়ে
বাংলা বর্ণমালা এরকম ছিল--
স্বরবর্ণ--
অ আ ই ঈ
উ
ঊ ঋ ৠ
ঌ
ৡ এ ঐ
ও
ঔ অ৹ অঃ (১৬টি) [বর্তমানে আছে ১১টি]
চ ছ জ ঝ ঞ
ট ঠ ড ঢ ণ=
ত থ দ ধ ন
প ফ ব ভ ম
য ৰ(=র) ল ব --
শ ষ স
হ ক্ষ (৩৪টি)
[বর্তমানে আছে ৩৯টি, অন্তস্থ
ব বাদে]
সেকালে
বাংলায় ছিল মোট ৫০টি বর্ণ, বর্তমানেও আছে মোট ৫০টি বর্ণ সংখ্যা একই থাকলেও
বর্ণমালার বিন্যাস এবং প্রকৃতি অনেকটা ভিন্ন হয়ে গেছে
বাংলা
ছাপাখানায় হরফ সংযোজনের নানান ধরন(স্টাইল) কিছুতেই এক হল না ফলে একই শব্দ বা
টাইপের গঠনে বিভিন্ন রূপ দেখা যায়
এটা বাংলা ছাপার অগ্রগমনে এক বড় বাধা লাইনো
টাইপ যখন বাংলা ছাপাখানায় এলো তখন তার সঙ্গে সঙ্গে এলো টাইপ করার কিবোর্ড যা হাতে
ছাপার টাইপে দরকার হয় না এর পরে যখন ডিটিপি (DTP ডেস্ক টপ প্রিন্টিং) এলো
তখনও তার জন্যও কিবোর্ড দরকার হল, কারণ তা তো আর হাতে কম্পোজ করার জিনিস নয়,
কিবোর্ডের সাহায্যে কম্পোজ করতে হয়
বিভিন্ন প্রকৃতির ছাপায় বিভিন্ন ধরনের কিবোর্ড, তাই সেই কিবোর্ড নিয়েও কিন্তু বাংলায় বিস্তর সমস্যা শুধু বিভিন্ন প্রকৃতির ছাপার কিবোর্ড নয়, একই ধরনের ফন্টের ছাপায়ও আছে বিভিন্ন কিবোর্ড
সে সমস্যার নিবৃত্তি/ক্ষান্তি কবে ঘটবে তা অজানা
কম্পিউটারে বাংলার সাধারণ টাইপ তথা
নন-ইউনিকোড ফন্ট ছাড়িয়ে এখন বাংলা ইউনিকোড ফন্টে পৌঁছে গেছে/যাচ্ছে এতে একই “লেখা”
বিভিন্ন কম্পিউটারে পড়ার যে সমস্যা হত, তা মিটেছে কারণ ইউনিকোড ফন্টের কিবোর্ডের ‘কি-টপ পজিশন’-এর উপরে লেখা নির্ভরশীল নয়, তা সম্পূর্ণভাবে কোডের উপরে নির্ভরশীল, সেটাই
ইউনিকোডের মূল বৈশিষ্ট্য, তাই যে লে-আউটের কিবোর্ডেই বাংলা টাইপ করা হোক,
তার “টেক্সট” শেষ অবধি একই হয় এই অমিত সুবিধার ফলে বাংলা কিবোর্ড লে-আউট কিন্তু সেই আঁধারেই রয়ে গেল সুবিধাটাই হয়ে পড়েছে অসুবিধা! কারণ
বাংলায় একাধিক কিবোর্ড লে-আউট আছে, এমনকী
ইউনিকোড ফন্ট নির্মাতারা অবধি ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন কিবোর্ড ব্যবহারের সুযোগ
দিচ্ছেন, ফলে বাংলা একক কিবোর্ড অধরা থেকেই যাচ্ছে
নন-ইউনিকোড ফন্টে
যে সমস্যা ছিল, অর্থাৎ ‘ইউনিক’ কোডের অনুপস্থিতি, সেই সমস্যা ইউনিকোড তথা ইউনিক
কোডে এসে সম্পূর্ণ মিটলেও, কিবোর্ডে তো তেমন কোনও ব্যবস্থা নেই, ফলে কিবোর্ডের অগোছালো ব্যাপারটা
পুরোদমেই রয়ে গেছে বাংলাভাষীরা সকলে একত্রে বসে এর বিহিত না করলে এটা চলতেই
থাকবে বিশ্বজুড়ে ইংরেজিতে কিবোর্ড কিন্তু একটাই টাইপরাইটারে যে কিবোর্ড ছিল,
কম্পিউটারেও সেই একই কিবোর্ড ফলে ইংরেজি টাইপিং-এ বিশ্বজুড়ে একতা বিরাজিত বাংলা
টাইপিং-এ আমাদের সবাইকে একটি মাত্র কিবোর্ড ব্যবহার করতে হবে তবেই বাংলা লেখা,
ছাপা ইত্যাদিতে দ্রুত অগ্রগতি ঘটবে নয়তো ইউনিকোডের অমিত সুবিধা পেয়ে অন্ধকার
ঘুচেও বাংলা লেখা-ছাপা-টাইপিং থেকে এখনও প্রকৃত আঁধার ঘুচল না ইউনিকোডের কোটিপতি হয়েও
বাংলা যেন সেই ভিখিরিই রয়ে গেল
বাংলা
বানানে যে সমস্যা তা মিটতে সময় লাগবে, কিন্তু বাংলা কম্পিউটার কিবোর্ডের সমস্যা না
মিটবার মতো নয়, সকলে মিলে উদ্যোগ নিলে অল্প সময়ের ব্যাপার মাত্র আর এখানে মতামত
দেবার লোক খুবই কম, বাংলা বানানের মতো শত লক্ষ নয়!
বাংলায়
যেন ছাপা ইত্যাদির সমস্যা মিটতেই চায় না একটা মিটল তো আর একটা বিপত্তি এসে জোটে
সেসব নিয়ে বাংলাভাষী অঞ্চলের প্রতিনিধিরা একত্রে বসে আলোচনার মাধ্যমে এসব সমস্যার
সমাধান না করলে বাংলা ছাপা, এবং তার সঙ্গে বাংলাভাষার অগ্রগতি ব্যাহত হচ্ছে,
শ্লথ হচ্ছে বাংলা পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাষা, এখন শোনা যাচ্ছে বাংলা হল পৃথিবীর মধুরতম ভাষা তার অগ্রগতি কমে যাওয়া রোধ করতে
হবে ভারত এবং বাংলাদেশ সরকার একত্রে বসে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটিয়ে ফেলতে হবে
বাংলাভাষীরা তো পৃথিবীতে জনসংখ্যায় কম নয়, অতি বিপুল তাদের সংখ্যা, বিশ্বের মোট
মাতৃভাষীর বিচারে বাংলাভাষীরা চতুর্থ থেকে সপ্তমের মধ্যে
সকল বাংলাভাষী অঞ্চল মিলে তথা-- বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, ঝাড়খণ্ড, শিলচর, এছাড়া, আন্দামান, দণ্ডকারণ্য এবং কর্ণাটকের উদ্বাস্তু বাংলাভাষীরা, ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের বাংলাভাষীরা এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী বাংলাভাষীরা মিলে একটি শক্তিশালী স্থায়ী কমিটি
গঠন করতে হবে, যাঁরা সম্পূর্ণভাবে বাংলাভাষার গতিপ্রকৃতি নিয়ন্ত্রণ করবেন অনেক কাল ধরে অনেক অবাধ স্বাধীনতাই ভোগ করা হয়েছে, আসলে যথেচ্ছাচার হয়েছে, এবার সেটা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রিত পথে চলবে লেখার রীতি, বানান, হরফের বিন্যাস এবং বর্ণ গ্রহণ বর্জন ইত্যাকার আগা-পাশ-তলা সকল নিয়ন্ত্রণ থাকবে এই কমিটির হাতে নিজের খেয়াল খুশি মতো আর ভাষার প্রয়োগ বা বানান লেখা চলবে না
এক
স্তর বাংলা লেখা-- অ আ ই... ক খ গ কা, কো,
কং, কঃ
দুই
স্তর বাংলা লেখা-- কুসুম, দূর, গর্ত, প্রথম,
তিন
স্তর বাংলা লেখা-- খর্জূর, দুর্মুখ, প্রার্থনা
চার
স্তর বাংলা লেখা-- এককালে পুরানো বানানের রীতিতে চারস্তরের উদাহরণ দেখা যেত ধনুক= তেমনি লেখারই একটি
যুক্তবর্ণ
আধুনিক লেখায়ও কিন্তু চার স্তরের এমনি সব ব্যাপার এখনও রয়েই গেছে
যেমন-- র্দ্ধ্ব
তবে বানান ক্রমে পালটাচ্ছে, এসবও কমে যাচ্ছে
চার বর্ণের যুক্তবর্ণ বাংলায় আছে অন্তত
১৬টি তবে চার স্তর(Four
tier), আর
চার বর্ণ(Four letters) মিলন
একই ব্যাপার নয়, অবশ্য চার বর্ণের মিলন না হলে চার স্তর হবার কথাও নয় চার বর্ণের
মিলনের উদাহরণ দেখা যাক, প্রকৃত পক্ষে তা তিন বর্ণেরই হেরফের--
চার বর্ণের সংযুক্ত রূপ/মিলন ১৬টি
ক ষ ণ য ক্ষ্ণ্য =তৈক্ষ্ণ্য
ক ষ ম য
ক্ষ্ম্য =সৌক্ষ্ম্য
ঙ ক ষ য
ঙ্ক্ষ = সঙ্ক্ষ্যক
ত র য ং
ত্র্যং =ত্র্যংশ
দ ব য ং
দ্ব্যং =দ্ব্যংশ
ন ত য ং
ন্ত্যং=ক্রান্ত্যংশ
ন ত র য
ন্ত্র্য =স্বাতন্ত্র্য
ন দ র ং
ন্দ্রং =চন্দ্রাংশু
ন ধ য ং
ন্ধ্যং=সন্ধ্যাংশ
র দ ধ ব
র্দ্ধ্ব=ঊর্দ্ব্ধে
র দ ধ ং
র্দ্ধং= অর্দ্ধাংশ
র ব ভ য র্ব্ভ্য=সগর্ব্ভ্য
র ষ ণ য
র্ষ্ণ্য=বার্ষ্ণ্য
স ট র ং
স্ট্রং=স্ট্রং
স ত র ং স্ত্রং=চতুস্ত্রিংশ
স প র ং
স্প্রং=স্প্রিং
এর
অনেক বানান এখন আর চলে না
এর-- র দ ধ ব র্দ্ধ্ব=ঊর্দ্ব্ধে বানান চলতি/প্রাচীন কায়দায় সব ফন্টে বোধ হয় লেখাও যায় না
ফিয়োনা রস একটি খুব দরকারি কথা বলেছেন,
চার্লস উইলকিনসের সময়ে বাংলা টাইপসংখ্যা কমই ছিল, তা প্রায় ১৭০(Including numerals, punctuation
and additional signs, the total fount of Bengali types comprised approximately
170 sorts -পৃঃ১৮) পরবর্তীকালে এই টাইপ সংখ্যা ৫০০-এর বেশি হয়েছে হাতে-ছাপাখানার বইপত্র ঘেঁটে আমার হিসেব মতো সংখ্যাটি দাঁড়িয়েছে ৫৫৭; এটা অগ্রগমনের চিহ্ন নয়
ফিয়োনা রস বলেছেন, No absolute character
set had been (nor has been) determined for Bengali composition; even the
simplest textual matter required several hundred sorts to achieve a fair
representation -পৃঃ১২৬ তার সমাধান যে এযুগেও হয়েছে এমন তো
মনে হয় না মনে রাখতে হবে মূলত ডাচ(ওলন্দাজ) ও ব্রিটিশ, এবং দিনেমার সংযোগ বাংলা হরফ
নির্মাণের মূল প্রেরণা নয়তো কবে যে বাংলা লেখালিখি ‘ছাপার’ মুখ দেখত তা কে জানে?
তবে এ কথাও স্পষ্ট করে মনে রাখতে হবে যে, এই সকল উদ্যোগের পিছনে আসল কারণ ছিল
এদেশে তাদের শাসন সুপ্রতিষ্ঠিত করা হ্যালহেড রচিত বাংলা ব্যাকরণ বইয়ের প্রচ্ছদেই আছে-- “ফিরিঙ্গিনামুপকারার্থ৹” (ফিরিঙ্গিনামুপকারার্থং)
কথাটি প্রতীকী
সেই প্রয়োজনে তারা কাজ করলেও তা এদেশীয় ভাষা, সাহিত্য সংস্কৃতি এবং
অর্থনীতির বিপুল উন্নয়ন ঘটিয়েছে,
সমাজ বিকাশ ঘটিয়েছে বিদ্যাসাগরের মতো টুলো পণ্ডিত, অথচ অতি আধুনিক দৃঢ় মনের মানুষ আমরা পেয়েছি এসব হল বিদেশি প্রভাবের ফল বাংলা গদ্য সাহিত্যের বিকাশ ঘটেছে ইংরেজদের ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে আর এদেশে আধুনিক বিজ্ঞান ও কারিগরি জ্ঞান ইংরেজদের মাধ্যমেই এসেছে সেটাও একই সঙ্গে মনে রাখতে হবে বিদেশে টেলিফোন প্রচলিত হবার অল্প পরেই কোলকাতায় টেলিফোন এসেছে
প্রতিটি কাজে তাদের যে প্রবল নিষ্ঠা তা অবশ্যই উল্লেখের দাবি রাখে সাম্রাজ্যবাদী হিসেবে তারা অবশ্যই অত্যাচারী ছিল, কিন্তু নানা জাতির বিদেশিদের ভিতর থেকে বহু জ্ঞানী এবং সেবাপরায়ণ মানুষও আমরা পেয়েছি, সেটাও মনে রাখা দরকার
বাংলাপিডিয়া, বাংলাদেশ জাতীয় জ্ঞান কোষ জানাচ্ছে--
সততা, নির্ভরশীলতা, ব্যয়ে স্বল্পতা, উন্নত মুদ্রণ প্রভৃতির জন্য অল্প
সময়ের মধ্যে শ্রীরামপুরের মুদ্রণ শিল্প সারা পৃথিবীতে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
কিন্তু ইংরেজ কোম্পানি তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে এরূপ উন্নত মুদ্রণশালার
অস্তিত্ব পছন্দ করেনি। তারা প্রেসটি বন্ধ করে দিতে বারবার চেষ্টা করেছে।
কিন্তু দিনেমার সরকারের জন্য তা সম্ভব হয়নি। ... ১৮০০-১৮৩২ সালের মধ্যে শ্রীরামপুর প্রেস থেকে ৪৫টি ভাষায় ২,১২,০০০ বই ছাপা হয়।... (শীলা বন্দ্যোপাধ্যায়)
মাত্র ৩৩ বছরে অভাবিত এই বই প্রকাশ, বছরে গড়ে, ৬৪২৫টি বই
বোঝা যাচ্ছে, অনেক জাতির হাত আছে বাংলা ছাপাখানার বিকাশে প্রসঙ্গত একথা উল্লেখ করা দরকার যে কেবল ইংরেজই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তৈরি করেনি, অনেকগুলি জাতিই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তৈরি করেছিল অঢেল সম্পদ ও সমৃদ্ধির কারণে বঙ্গদেশ সারা পৃথিবীর নজর কেড়েছিল তাই তৈরি হয়েছিল--
১ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি
৩১ ডিসেম্বর,
১৬০০ খ্রিস্টাব্দ
বঙ্গের
কোলকাতায় এদের মূল ব্যবসাকেন্দ্র ছিল
২ওলন্দাজ(ডাচ) ইউনাইটেড ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি
২০মার্চ, ১৬০২
বাংলার সঙ্গে
সম্পর্ক আছে
৩ডেনিশ(দিনেমার, Denmark) ইস্ট ইন্ডিয়া
কোম্পানি
একটি ১৬১৬
খ্রিস্টাব্দ, প্রথমটির অবসানে অন্যটি ১৬৭০ খ্রিস্টাব্দ
৪পর্তুগিজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি
১৬২৮
খ্রিস্টাব্দ
৫ফরাসি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি
১৬৬৪
খ্রিস্টাব্দ
বঙ্গের
চন্দননগরে এদের উপনিবেশ ছিল
৬সুইডিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি
১৭৩১
খ্রিস্টাব্দ
৭অস্ট্রেলিয়ান ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি
১৭৭৫
খ্রিস্টাব্দ
এদের সবাই-ই হয়তো শেষ অবধি বঙ্গে আসেনি, তবে সবার লক্ষ্য যে বঙ্গের বিপুল সম্পদ তাতে সন্দেহ নেই তাদের নামই তার স্পষ্ট প্রমাণ
পরবর্তীকালে
নানা উদ্যোগের ফলে বাংলা টাইপ সংখ্যা প্রায় ৫৫৭ হল র-ফলা ধরনের বিবিধ হরফ সংযোগ করে
নানা টাইপ বানিয়ে তাড়াতাড়ি কম্পোজ করার চেষ্টার ফলে সেটা ঘটেছে যাঁরা ছাপাখানায়
টাইপ কম্পোজ করেন তাঁদের কথা বোধহয় কেউ ভাবেন নি এত হরেক টাইপ রাখারও তো বিরাট
সমস্যা বাংলায় টাইপ রাখার চারটে ডালা বা কেস লাগে, সামনে থাকে দুটি-- উপরে এবং নিচে, আর পাশে দুটি-- ডাইনে
এবং বাঁয়ে আর ইংরেজিতে মাত্র দুটি এটা থেকেই বোঝা যায় আমাদের সচেতনতা কতটা বাংলা
বানান আর ঠিক হবে কী করে, টাইপের ডালা বাড়াতেই আমরা ব্যস্ত বানানেও তেমনি জটিলতা
বাড়াতে আমরা সব উদ্যোগ নিয়ে থাকি ড্রপ-আউট বাড়ুক তাতে কী? জটিলতা কমাবো না বানান
হবে অতি সূক্ষ্ম সংস্কৃত শব্দের জন্য এক নিয়ম, দিশি শব্দের জন্য
আরেক নিয়ম, ইংরেজির
জন্য অন্য নিয়ম বাংলা বানান মনে রাখতেই শিক্ষার দুয়ার থেকে বিদায়, শিক্ষাও শেষ
বাংলা
বানান যদি ঠিক করতে হয় তবে নিয়ম একটাই হতে হবে আর তা হবে ইংরেজির জন্য যে নিয়ম করা হয়েছে, অর্থাৎ উচ্চারণমূলক বানান, সেই
নিয়ম সর্বত্র চলবে গভর্ণর যেমন লেখা হবে না, লেখা হবে গভর্নর অর্থাৎ মূর্ধন্য-ণ নয়, দন্ত্য-ন এখানে ণত্ব বিধি, ষত্ব বিধি মানার দরকার নেই ঠিক এমনিভাবে ষণ্ণবতি (৯৬) না লিখে লিখতে হবে শন্নবতি এটা যত দিন না-করা যাবে ততো দিন, আমরা বানান-কানা হয়েই থাকব
নয়তো আরও হাজার বছর হাতড়ে বেড়াতে হবে, বানান আর
ঠিক হবে না আমরা বোধহয় শিক্ষাটা তেমন চাই না, চাই বানানটা মুখে মুখে তো অনেক জনশিক্ষা হতে পারে, সেখানে বানান নিয়ে তো সমস্যা নেই সাহিত্য, বিজ্ঞান, বাণিজ্য, কারিগরি, তথ্যপ্রযুক্তি বা আইটি, যা নিয়েই লেখা হোক, আগে চাই বানানের এই বিভাগমাপ তাই
বাংলায় তেমন গবেষণা হতে পারবে না কারণ সেখানে বানানটাই গুরুতর বিষয়, বিষয়টা গুরুতর
নয় এই পাণ্ডিত্য আমাদের অগ্রগতি ব্যাহত করবে মনে রাখতে হবে ”বাংলা”-টা সংস্কৃত
পণ্ডিতদের ভাষা নয়, সাধারণ বাঙালির ভাষা “বাংলা” শব্দটির বানান হতে পারে--
বাঙ্গালা, বাঙ্গলা, বাঙ্গ্লা, বাঙলা, বাঙ্লা, বাংলা এই ৬ রকম এই শব্দটিট বানান “বাংলা” করেছেন রবীন্দ্রনাথ
বঙ্গ কথাটির অর্থই হল ব্রাত্য বঙ্গে যারা বাস করে তারা ব্রাত্য সেই ব্রাত্যদের ভাষা বাংলাকে সংস্কৃতের ছাঁচে ঢালাই করে বিশুদ্ধ করায় বাংলার মান বাড়বে, কিন্তু তা আর ”বাংলা” থাকবে না ‘ব্রাত্য’ সেই সাধারণ বাঙালিদের এত সংস্কৃত-দৌড়ে কাজ কী? বাংলায়
সংস্কৃত বর্ণমালা নেওয়া হয়েছে ঠিকই, কিন্তু অনেক সংস্কৃত ধ্বনিই তাতে অনুপস্থিত, তাই তা আংশিক
বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞ মুহম্মদ শাহজাহান
মিয়া লিখেছেন, “চৈতন্য সাহিত্য[চৈতন্য ১৪৮৬-১৫৩৩, আয়ু ৪৮ বছর] বাংলাভাষায় যে কেবল
জীবনচরিত লেখার প্রবর্তন করল, তা-ই নয়, ভাষার ব্যাপক অনুশীলনের মাধ্যমে বাংলা
বানানেও সর্বপ্রথম বিশুদ্ধতা রক্ষার চেষ্টা করতে লাগল এর প্রধান কারণ এই যে,
চৈতন্যচরিতকারের সকলেই সংস্কৃত ভাষায়ও সুপণ্ডিত ছিলেন সে জন্য বিশুদ্ধ সংস্কৃতশব্দের
ব্যাপক ব্যবহার ও সেগুলির বানানের বিশুদ্ধতা রক্ষায় তাদের যত্ন ও চেষ্টা স্বাভাবিক
এভাবে ভারতচন্দ্র রায়ের[১৭১২-১৭৬০ আয়ু ৪৯ বছর] আবির্ভাবের পূর্বেই সংস্কৃত শব্দের
প্রয়োগ ও সেগুলির বানানের বিশুদ্ধতা রক্ষার চেষ্টা বাংলাভাষায় বিশেষভাবেই বিস্তৃতি
লাভ করেছিল(বাংলা পাণ্ডুলিপি পাঠসমীক্ষা, পৃঃ৮৮ [বাংলা একাডেমী:ঢাকা, প্রথম
প্রকাশ, ফেব্রুয়ারি-১৯৮৪]। তবে তাঁরা কি খারাপ কাজ করেছেন? তা নয়, বরং বাংলাভাষাকে তাঁরা প্রতিষ্ঠা দিয়েছেন তার আগে তো বলা হত, দিশিভাষা বাংলায় শাস্ত্র চর্চা করলে তার নরকে স্থান হবে এই পণ্ডিতেরা বরং বাংলাভাষার সেই অব্যবহার্যতা দূর করে বাংলাকে সামাজিক মান এবং মান্যতা দিয়েছেন
একটা কথা, বাংলা বানান সংস্কার করতে গিয়ে শব্দ ধরে ধরে বানান সংস্কার করা চলবে না, করতে হবে বর্ণধ্বনি ধরে আর যে-বর্ণধ্বনি সমূহ বাংলায় অলচিত, তা সব একবারে দূর করার প্রায়স হবে উন্মাদের প্রায়স তাই সবচেয়ে প্রয়োজনীয়, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সংস্কার শুরু করতে হবে
আর সেটি হবে
একটি মাত্র সংস্কার দিয়ে সেই একটি মাত্র সংস্কার ১০ বছর চলবে, আর অন্য কোনও সংস্কারে হাত দেওয়া হবে না বাংলা বানান পুরো সংস্কার হতে ৫০ বছরের বেশি সময় লাগবে প্রথম সংস্কারটি হবে-- ই/ঈ, ি/ী থেকে ‘ঈ’ বর্জন করে আর ব্যবহারিক সুবিধার জন্য স্বরচিহ্ন “ ি ” এর বদলে গ্রহণ করা হবে হবে--‘ী’ ভাষা ও বানান হল একটি অলিখিত সামাজিক চুক্তি এই বর্জন প্রক্রিয়ার পথে বাংলা বর্ণের তুলনাংক বিচার করে দেখতে হবে বাংলা বানানে মোট ভুলের আশংকা হল প্রায় ৩১.৭৬%শতাংশ, ই-ঈ, ি - ী ব্যবহার সম্মিলিতভাবে
৮.০৪৩৯%শতাংশ, এর চার ভাগের একভাগ বা ২৫ শতাংশ(
৮.০৪৩৯/৩১.৭৬
= ২৫.৩২৭% তথা ৮.০৪৩৯×৪=৩২.১৭৫৬) দূর হবে কেবলমাত্র একটি সংস্কার করে, অর্থাৎ “ঈ” বর্জন করে
বাংলা এবং ইংরেজি
ছাপার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল, ইংরেজি যেমন সরল একস্তরীয় (mono-tier) লেখা, বাংলা তা নয়, বাংলা লেখা হল তিন স্তরীয়(three-tier),
ফলে হরফের উচ্চতা বা এক্স-হাইট সামলে তা ছাপা বা লেখা দুরূহ মেয়েদের যেমন সদ্য শাড়ি
পরা শেখার সময়ে কী ঝামেলাই না পোহাতে হয়! সেই ঝামেলা বাংলা ছাপায় নিত্য নিয়ত! তাই তিনস্তরীয় ধারা বজায় রাখতে হরফের মূল
উচ্চতা কমাতে হয় আবার খুব বেশি ছোটো হরফ হলে বাংলা লেখা পড়াই যায় না ইংরেজিতে ৪(চার)
পয়েন্টের লেখাও পড়া যায়, বাংলায় ৮ পয়েন্টের কমে পাঠযোগ্যতা (লেজিবিলিটি Legibility)
খুবই কমে যায় এটা বাংলা লেখার/ছাপার বড় সমস্যা
বিষণ্ণ ঔদাসীন্যে ঊষাবৌদি বাংলাভাষায় প্রচলিত ঈশপের নিখুঁত গল্পটির ডালপালা
অর্ধেক ছড়াতেই ঋতু ভুঁইঞা আর ঐন্দ্রিলা ধড়ফড়িয়ে দারুণ হৈ-হৈ
করে উঠল__ ওঃ, ব্যাস্ এবার থামো তো, বুঝেছি বড্ডো
পুরানো ঢঙের কেমন এক গল্প যার নীতিবাক্য হল,“মূঢ় আড়ম্বর ও আত্মশ্লাঘার ফল জীবনে
বিঘ্ন ও বৃহৎ ক্ষতি”-- তাই না, এ্যাঁ? ০১২৩৪৫৬৭৮৯ ৳৫৬/- ৫৬/- --বাংলা ৪(চার)
পয়েন্ট
বিষণ্ণ ঔদাসীন্যে ঊষাবৌদি বাংলাভাষায় প্রচলিত ঈশপের নিখুঁত গল্পটির ডালপালা
অর্ধেক ছড়াতেই ঋতু ভুঁইঞা আর ঐন্দ্রিলা ধড়ফড়িয়ে দারুণ হৈ-হৈ
করে উঠল__ ওঃ, ব্যাস্ এবার থামো তো, বুঝেছি বড্ডো
পুরানো ঢঙের কেমন এক গল্প যার নীতিবাক্য হল,“মূঢ় আড়ম্বর ও আত্মশ্লাঘার ফল জীবনে
বিঘ্ন ও বৃহৎ ক্ষতি”-- তাই না, এ্যাঁ? ০১২৩৪৫৬৭৮৯ ৳৫৬/- ৫৬/- --বাংলা ৮ পয়েন্ট
বিষণ্ণ ঔদাসীন্যে
ঊষাবৌদি বাংলাভাষায় প্রচলিত ঈশপের নিখুঁত গল্পটির ডালপালা অর্ধেক ছড়াতেই ঋতু
ভুঁইঞা আর ঐন্দ্রিলা ধড়ফড়িয়ে দারুণ হৈ-হৈ করে উঠল__ ওঃ, ব্যাস্ এবার থামো তো, বুঝেছি বড্ডো পুরানো ঢঙের কেমন এক গল্প
যার নীতিবাক্য হল,“মূঢ় আড়ম্বর ও আত্মশ্লাঘার ফল জীবনে বিঘ্ন ও বৃহৎ ক্ষতি”-- তাই
না, এ্যাঁ? ০১২৩৪৫৬৭৮৯ ৳৫৬/-
৫৬/- --বাংলা ১১ পয়েন্ট
The quick brown fox jumps over a lazy
dog --English 4
points
The quick brown fox jumps over a lazy
dog --English 8
points
The
quick brown fox jumps over a lazy dog --English 11 points
নতুন হরফে লেখা বাংলা(কারিগরি ফন্টে)--
তাই
বাংলা লেখাকে সরলরৈখিক একস্তরীয় করতে হবে, অন্তত দুইস্তরীয় করার উদ্যোগ তো নিতেই হবে
হরফের এবং লেখার জটিলতার কারণে বাংলা ছাপতে ইংরেজি ছাপার চেয়ে দ্বিগুণ
জায়গা(কাগজ) লাগে হরফের জটিলতার কারণে বাংলা টাইপ করতেও অনেকটা বেশি সময় লাগে বাংলা “কারিগরি
ফন্ট”(আমারই করা) ব্যবহার করলে বাংলা ছাপার জায়গা ৪০%শতাংশ কম লাগবে, টাইপ করার গতিও বাড়বে গতির
যুগে, আধুনিক কারিগরি উন্নতির যুগে তাই বাংলা ছাপা একস্তরীয় করার চিন্তাভাবনা করতে
হবে
কোরিয়ার লোকেরা তাঁদের ভাষার যে আমূল সংস্কার করেছেন, তা
অতুলনীয় পারলে বাংলাভাষারও তেমন ব্যাপক পরিবর্তন করা দরকার সে
নতুনত্ব-- বাংলাভাষায় নতুন প্রাণ আনবে যাহোক, যতটুকু করলে বাংলাভাষা প্রকৃতই “বাংলাভাষা”
হয়ে উঠবে, ততোটুকু পরিবর্তন করতেই হবে
কোরিয়ার
লোকেরা তাঁদের ভাষার আমূল সংস্কার করতে গিয়ে কী করেছেন তা শোনা যাক--
“The writing problem in the Republic of Korea has been solved, and typewriters have been devised for
writing with a horizontal left-to-right adaptation
of the traditional alphabet. It is supposed to be ‘so highly scientific in
principle that even the International
Phonetic Symbols have to bow before the Korean alphabet’ (John Starr Kim, in ‘Ink-Remington Rand’ vol.
III, no.4, September 1947. Mr. Kim was
one of the technicians who developed the Korean typewriter Keyboard).
Formerly, the alphabet– which was
invented in A.D. 1446 by king She-Jong– was used vertically in columns from
right to left in conglomerated syllabic units imitating Chinese characters.”(p-34)
--The use of vernacular language in education– UNESCO, Paris-1953.
লাইনো
টাইপের যুগে সে কাজটি অনেকটা এগিয়েছিল, কিন্তু ফটোকম্পোজিং বা পিটিএস (PTS)-এ এসে
বাংলা ছাপা আবার ফিরে গেছে পুরানো সেই দিনে সবার উন্নতি হয়, বাংলা ছাপার হল না
কেন? শুধু দেখতে সুন্দর গঠনের হরফ হলেই সব কাজ মেটে না
বাংলা হাতে-ছাপার ছাপাখানায় এবং লাইনো কম্পোজিং-এর ছাপাখানায় হরফ সংযোজন নিয়ে যে ব্যত্যয় তা নিয়ে আমি লিখেছিলাম, ৪০ বছর আগেই, সাহিত্য ও সংস্কৃতি পত্রিকায়(শ্রাবণ-আত্বিন ১৩৮৩, জুলাই-সেপ্টেঃ-১৯৭৬, পৃঃ ২৪৬-৫৫) সেটা যে লোকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল তা বোঝা যায় একটি গ্রন্থে তার উল্লেখ দেখে (দুই শতকের বাংলা মুদ্রণ ও প্রকাশন, সম্পা. চিত্তরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়, আনন্দ পাবলিশার্স, জুন ১৯৮১)
শুনেছি
চিনা ভাষায় লেখার ব্যবস্থা হল এক-একটি হরফে এক-একটি শব্দ বাংলায় অনেকটা যেমন-- ক্ষ,
কিংবা জ্ঞ, অথবা ষ , —এ ইত্যাদি [চিনা =自( zì ) নিজ ] বাংলার স্থাণু অবস্থার এসব ব্যবস্থা এখন সংশোধন করার দিন এসেছে
তালপাতায় লেখার দিনে, বা ছাপার ব্যবস্থার পুরানো দিনে অনেক কিছু নিজের মতো চালানো
হত, এখন আর তা চলে না তাই বাংলা লেখা, এবং ছাপার হরফ সন্নিবেশ নিয়ে গভীরভাবে
ভাবতে হবে একটা পথ আমাদের বের করতেই হবে চিনা লেখায় জটিলতা কাটিয়ে তা অনেক সরল
করা হয়েছে, বাংলায়ও তা হোক কোরীয় ভাষায় লিখন ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটানো
হয়েছে, তাদের দাবি আন্তর্জাতিক ফোনেটিক এ্যালফাবেটের সাহায্যে লেখার যে ব্যবস্থা, তার
চেয়েও কোরীয় লেখা উন্নত হয়েছে পৃথিবীতে প্রতিযোগিতায় টিঁকে থাকতে হলে আমাদেরও সেই
পথ অনুসরণ করতে হবে আজ ধরণীগ্রামে(Global
village) আমরা জাপান, চিন, কানাডা, আমেরিকা বা ইংলন্ডের পাশেই
একদম গায়ে গায়ে বাস করি, পাশাপাশি টেবিলের যেটুকু দূরত্ব! পাশের বাড়ি যাবার চেয়ে ইন্টারনেটে
এদের দূরত্ব বরং কমই!
কবে
ঘুচবে বাংলা লেখার আজন্ম দুদর্শা?
একটি মুদ্রণ বিষয়ক প্রদর্শনীতে বাঁদিক থেকে
স্বপন চক্রবর্তী, ফিয়োনা রস,
সুকান্ত চৌধুরি, এবং Jo De Baerdemaeker.
বাংলা লেখার পদ্ধতি
এবং বাংলা টানা লেখা ইংরেজির সঙ্গে তুলনায় অনেক পিছিয়ে-- সে
আমরা সবাই জানি কিন্তু সেই অনেক পিছিয়ে থাকা ব্যবস্থাকে যদি সহজ সরল করে ইংরেজির
সমকক্ষ করতে পারি, তবে তা বাংলা লিখন পদ্ধতিকে এক নতুন জীবন দেবে বাংলা হয়ে উঠবে
আরও গৌরবময় ভাবপ্রকাশে বাংলা এক অতি দক্ষ ভাষা, এবং তা ভারতের শ্রেষ্ঠ ভাষা,
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ভাষাক’টির একটি আর এরকম কথা উঠেছে যে, বাংলাই পৃথিবীর
মধুরতম ভাষা (...is
to be believed, Bengali has been voted the sweetest language in the world. Times of India, Apr 22, 2010 )
সাহিত্য সম্পদে বাংলা উন্নত বলে ভারতের স্বাধীনতা লাভের বহু আগেই(৩৫ বছর আগে) ১৯১৩
খ্রিস্টাব্দে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের হাতে বাংলায় আসে নোবেল পুরস্কার, যা ভারত
উপমাহাদেশে তো বটেই ইউরোপের বাইরেও প্রথম
এবারে
যদি বাংলার লিখন পদ্ধতির সম্যক উন্নতি সাধন করা যায় তবে বাংলা আরও এক ধাপ এগিয়ে
যাবে এই উদ্দেশ্যে বাংলা লেখার জন্য তৈরি হয়েছে দ্বিতীয় প্রজন্মের বাংলা ইউনিকোড
ফন্ট এই ফন্ট(হরফসমূহ) দিয়ে বাংলা লিখলে-- লেখা যাবে সহজে, বোঝা যাবে সহজে, পড়া
যাবে সহজে অল্প বাংলা জানা দেশি এবং বিদেশি মানুষ, এবং ইংরেজি মাধ্যমে পড়া কম
বাংলা জানা বাঙালি পড়ুয়ারাও সহজে বাংলা পড়তে পারবে চালু পদ্ধতির মণ্ড প্রকৃতির
যুক্তবর্ণ এতে খুব সরল করা হয়েছে-- —এ, —ও, ষ
ইত্যাদির জটিলতা এড়িয়ে তা-- ত্র, ত্ত, ষ্ণ করা হয়েছে অবশ্য প্রথম ধাক্কায়
তা আমাদের বেশ চকিত করবে ঠিকই, কিন্তু এর লিখন সারল্য সব বাধা কাটিয়ে ক্রমে পরিচিত
হয়ে উঠবে সে লেখা ইংরেজি লেখার মতোই স্পষ্ট ও ঋজু হবে নিজে একবার পরখ করে না
দেখলে এই সম্মুখ গমন প্রচেষ্টার খবরটা অজানা থেকে যাবে
সব
লেখাই একটি অভ্যাসের ব্যাপার, তাই-- —এ, —ও, ষ
ইত্যাদি বিকৃত গঠনের লেখাকেই আমাদের সঠিক বলে মনে হয়, ফলে সরল করে ত্র,
ত্ত, ষ্ণ লেখা অদ্ভুত আশ্চর্য মনে হবেহরফকে বিকৃত না করে এমনি লেখাকেই বরং লেখার বিকৃতি মনে হবে!
যুক্তধ্বনির
বর্ণায়নে লিপিপদ্ধতিগত কৌশলে বস্তুত তা ইংরেজিকে ছাপিয়ে গেছে
ইংরেজির মতো একই
কায়দা অনুসরণ করে যদি বাংলায় নতুন প্রবর্তিত ‘যুক্তবর্ণ ব্যবস্থায়’ লেখা হয়, তবে
কিন্তু ইংরেজি হরফ-ব্যবস্থার চেয়ে তা আরও ভালোভাবে লেখা যাবে যেমন, যদি ইংরেজিতে stop, school, club লিখি তবে বাংলাতে সেটাই অনেক বেশি ভালোভাবে লেখা যাবে-- স্টপ, স্কুল,
ক্লাব এতে ভালোটা কী হল? স্টপ লিখতে ‘স্ট’-এর ছোটো স-এর
উচ্চারণ হচ্ছে লঘু বা অল্প মাত্রায় লেখার হরফে সেটা প্রতিফলিত (উচ্চারণ লঘু বা অল্পমাত্রার তাই হরফ ছোটো) আবার স্কুল-এ ‘স্ক’-এ স-এর
উচ্চারণ এবারও হচ্ছে লঘু বা অল্প মাত্রায়, লেখার হরফে এবারও সেটা প্রতিফলিত, ক্লাব
লেখায় তেমনি ‘ক্ল’-তে ক-এর উচ্চারণ
হচ্ছে লঘু বা অল্প মাত্রায়, লেখার হরফে সেটাও প্রতিফলিত
ইংরেজিতে কিন্তু সেটা হয় না ইংরেজিতে সকল হরফ সকল সময়েই পূর্ণ অবয়বে লেখা হয় তাই
ইংরেজিতে যুক্তবর্ণ তথা যুক্তধ্বনির উচ্চারণের সঙ্গে লিখনের সাযুজ্য কম থাকে
ইংরেজিতে কোনও বর্ণের উচ্চারণ লঘু হলেও হরফ কিন্তু সেই পূর্ণ অবয়বেরই থাকে বাংলায়
সেটা না হয়ে, লঘু উচ্চারিত ধ্বনির বর্ণ/লিপি/হরফ-- লঘু তথা ছোটো হয়, তাই বাংলা
যুক্তবর্ণের নতুন লিখন পদ্ধতি ইংরেজির চেয়ে যুক্তধ্বনি লেখার ক্ষেত্রে বেশি
যুক্তিগ্রাহ্য হয়েছে
বাংলা
ব্যঞ্জনবর্ণ উচ্চারণ সহজ, কারণ প্রতিটি ব্যঞ্জনের সঙ্গে ‘অ’ ধ্বনি অদৃশ্যভাবে
লিপ্ত থাকে(inherent), নয়তো ব্যঞ্জনবর্ণ উচ্চারণ করা কঠিন বাংলায় এই লিপ্তি(inherence / involvement - অধিষ্ঠান) অপসারিত হয় যখন
তা যুক্তবর্ণে একীভূত হয়, যেমন-- স্ট, স্ক, ক্ল অর্থাৎ বাংলা বর্ণমালা সেমি
এ্যালফাবেটিক চরিত্রের হয়েও তা নতুন উপায়ে
যুক্তবর্ণ গঠনে-- লিপ্ত ‘অ’ বিয়োজন ব্যাপারটি স্পষ্ট করে তোলে কিন্তু ইংরেজিতে তা
ঘটে না ইংরেজি হরফ সেখানেও যথাযথ পূর্ণ অবয়বের থাকে, কারণ ইংরেজি হল পূর্ণ
এ্যালফাবেটিক চরিত্রের বর্ণমালা, তাই ইংরেজিতে বর্ণের সঙ্গে ‘অ’ ধ্বনি যোজনা তথা
‘অ’-লিপ্তি (inherence/involvement - অধিষ্ঠান) ব্যাপারটি নেই যদিও ইংরেজির মতো পূর্ণ এ্যালফাবেটিক চরিত্রের বর্ণমালাই
কিন্তু উন্নত বর্ণমালা
বাংলা
এ ক্ষেত্রে দুটি দিকই রক্ষা করছে-- ব্যঞ্জনবর্ণ উচ্চারণও সহজে হচ্ছে, আবার
যুক্তবর্ণ গঠনে বর্ণগুলি সংশ্লিষ্ট ধ্বনির লঘুতা/হ্রস্বতা, এবং পূর্ণতা বর্ণের
অবয়বে ধারণ করছে
=====================
উল্লেখ: --
গ্রন্থ:
ফিয়োনা জি. ই. রস
-- The Printed
Bengali Character and its Evolution 1999,
(Indian Ed.) 2009 published by Sahitya Samsad
২A
Grammar of the Bengal Language by Nathaniel Brassey Halhed, printed at Hoogly
in Bengal,
M DCC
LXXVIII (অর্থাৎ ১৭৭৮),
Bi-centenary
facsimile edition 1980(Ananda Publishers)
৩নেটের বিভিন্ন ব্লগ ও সাইট
৪বিভিন্ন পুস্তক ও পত্রপত্রিকা
৫বিবিধ
২৪/০৫/২০১৪ তারিখে
আমি ডঃ ফিয়োনা জি. ই. রসকে ইমেল করেছিলাম তাঁর সঙ্গে
যোগাযোগের জন্য
ডঃ
ফিয়োনা জি. ই. রস প্রেরিত ফিরতি মেল ২৮/০৫/২০১৪
Fiona Ross
To Me
May 28 at 8:41 PM
Dear Manoj Kumar
Thank you for your letter. I had a
colleague translate it to ensure that I understood you.
Yes, I would be happy for you to go
ahead. I would be glad to receive a copy.
Just one thing: my second
son's name is Jed (not Fed).
With kind regards
Fiona
-----
Dr Fiona Ross
Typographic Consultant in Non-Latin
Scripts
Associate Professor in Non-Latin
Type Design
Curator Non-Latin Type Collection
Dept of Typography Graphic Communication
University of Reading
..........................
♥♥
==========
ঋণ:
বিভিন্ন আকর গ্রন্থ, সাধারণ গ্রন্থ, পত্র-পত্রিকা,
ইন্টারনেটের ওয়েবসাইট ও ব্লগ থেকে নানাভাবে প্রভূত সহায়তা গ্রহণ করা হয়েছে তাঁদের
সকলের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই
মনোজকুমার দ. গিরিশ
মণীশ পার্ক, কোলকাতা,
ভারত
সকলরকম মতামত স্বাগত
সমাপ্ত
সংশোধন, সম্পাদন, সংযোজন চলছে
সর্বশেষ পরিমার্জন ২৭/০৮/২০১৮
নিবন্ধ লেখক--
মনোজকুমার দ. গিরিশ
ফিরে যান প্রথম পর্বে:
(মোট ৭টি অংশ)বাংলা লিখনের আজন্ম দুর্দশা ঘুচুক--১ম
:
http://banglainternational.blogspot.in/2015/03/blog-post.html